করোনা মহামারিতেও চলছে স্বাস্থ্য বিভাগে মহা দুর্নীতি। দেশব্যাপী হাম-রুবেলা ক্যাম্পেইন শুরু হচ্ছে আগামী ১২ ডিসেম্বর। ক্যাম্পেইন উপলক্ষে স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা ছিল গত ৭ ডিসেম্বর। তবে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের একটি (বোয়ালখালী) উপজেলা ব্যতীত অন্য কোনো উপজেলার স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীরা এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেননি। নিয়োগ বিধি সংশোধন করে বেতন বৈষম্য নিরসন, পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগসহ চার দফা দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে কর্মবিরতি পালন করে আসছেন স্বাস্থ্য বিভাগের স্বাস্থ্য সহকারীরা। দাবি পূরণ না হওয়ায় এখনো আন্দোলনে আছেন তারা।
এদিকে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অনুপস্থিত স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীদের তালিকা পাঠাতে সিভিল সার্জন কার্যালয়কে আগেই নির্দেশনা দিয়ে রেখেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের ১৩ উপজেলার স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীসহ সবমিলিয়ে প্রায় ৮০০ জনের তালিকা এরই মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠিয়েছে সিভিল সার্জন কার্যালয়। তালিকা পাঠানোর তথ্য নিশ্চিত করে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, অধিদপ্তরের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে অনুপস্থিতের তালিকা আমরা পাঠিয়েছি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। স্বাস্থ্য সহকারীরা কাজে যোগ না দিলেও হাম-রুবেলা ক্যাম্পেইন নির্ধারিত সময়ে (১২ ডিসেম্বর) শুরু হবে জানিয়ে সিভিল সার্জন বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ প্রোভাইডার (সিএইচপি), পরিবার-পরিকল্পনার স্টাফদের নিয়ে ক্যাম্পেইন সম্পন্ন করার নির্দেশনা রয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী ৬ সপ্তাহব্যাপী এ ক্যাম্পেইন চলবে।
প্রথমে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ক্যাম্পেইন কার্যক্রম চালানো হবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় চসিকের স্টাফদের নিয়ে এই ক্যাম্পেইন চালানো হয়। যার কারণে চসিক এলাকায়তেই প্রথমে এই ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হবে। পরবর্তীতে উপজেলা পর্যায়ে ক্যাম্পেইন চালানো হবে।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিসটেন্ট এসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম জেলা শাখার তথ্য অনুযায়ী- জেলার ১৪টি উপজেলায় স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্মরত আছেন ৬০০ জন। সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক আছেন ২০০ জন এবং স্বাস্থ্য পরিদর্শক ৪০ জন। জেলায় স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারী সবমিলিয়ে কর্মরত আছেন প্রায় ৮৪০ জন। এর মধ্যে বোয়ালখালী উপজেলায় স্বাস্থ্য সহকারী, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকসহ সবমিলিয়ে ৪০ জন কর্মরত আছেন। প্রশিক্ষণে বোয়ালখালী উপজেলায় কর্মরতরা উপস্থিত ছিলেন বলে সিভিল সার্জন নিশ্চিত করেছেন। আর অন্যান্য উপজেলার যারা অনুপস্থিত ছিলেন তাদের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানান সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় যোগ না দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিসটেন্ট এসোসিয়েশন চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মিজান উদ্দিন বলেন, প্রশিক্ষণে অনুপস্থিতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমরা জেনেছি। কিন্তু কেন্দ্রীয় নির্দেশে আমাদের আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত আছে। কেন্দ্রের নির্দেশনার বাইরে তো আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।