আরিফুল ইসলাম; রাঙামাটিঃ
রাঙ্গামাটির বরকল উপজেলাধীন আইমাছড়া ইউনিয়নের কলাবুনিয়া গ্রামের বাসীন্দা মুনসুর আলী। তার অত্র কলাবুনিয়ার ১ নং ওয়ার্ডে ক্রয়কৃত নিজ জমি শামসুল হক নামক জনৈক ব্যক্তি জোর করে দখল করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
তিনি আরো জানান,আমার দাদী মানবরু বেগম তার জমি ২৬৯ এর অন্দরের ১ নং চৌহদ্দির ২০ শতক জায়গা ১ লক্ষ টাকার বিনিময়ে আমাকে দলিল করে দেয়।বিগত সময়ে তার পা ভেঙ্গে গেলে তাকে দেখার বা চিকিৎসা করার জন্য কেউ এগিয়ে না আসলে আমিই নিজ উদ্যোগে তাকে রাঙ্গামাটিতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাই। উক্ত চিকিৎসা করানোর সময় তার চিকিৎসার খরচ তার কোন সন্তান বহনে অসম্মতি জানালে তার ৫সন্তানের সম্মতিক্রমে আমিই সম্পুর্ন খরচ বহন করি।যার ফলে আমার দাদী নিজে থেকেই আমার প্রতি খুশি হয়ে উক্ত জমিটি আমার কাছে বিক্রি করেন।উক্ত জমি ক্রয়ের দলিলে স্বাক্ষী হিসেবে তার ঔরসজাত ৫ ছেলে মেয়ের সম্মতি ও স্বাক্ষর রয়েছে।কিন্তু তার বড় ছেলে শামসুল হক সব কিছু জেনেও অবৈধভাবে উক্ত জমিটি জোর করে দখল করে রেখেছেন।যার ফলে আমি আমার ক্রয় কৃত জমিটি দখল পাচ্ছি না।এক্ষেত্রে শামসুল হককে সহযোগীতা করছে তার মেয়ের জামাতা ৩ নং আইমাছড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাকির হোসেন মেম্বার।আমি প্রশাসন তথা সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে আমার জমি ফেরত পাওয়ার জন্য জোর আবেদন করছি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত শামসুল হক জানান,উক্ত জমিটি অনেক আগে আমার মা মানবরু বেগম আমাকে দলিল করে দিয়েছেন।বর্তমানে জমিটি আমার ভোগ দখলে রয়েছে।আমার ভাই বোনেরা আমার প্রতি ষড়যন্ত্র করে পরবর্তিতে মুনসুরের কাছে জমিটি আমার মাকে দিয়ে বিক্রি করায়।
এ বিষয়ে জাকির হোসেন জানান,উক্ত বিষয়টির সাথে আমি জড়িত নই। এলাকার মেম্বার হিসেবে আমরা একাধীকবার বিষয়টা সমাধানের চেষ্টা করেছি। আমার শশুড় তার বাবার জমিটুকু কারো কাছে বিক্রি না করে স্মৃতি হিসেবে নিজের কাছে রেখে দিতে চেয়েছেন।তিনি আরো বলেন,ওয়ারিশ সুত্রে উক্ত জমিতে আমার শশুড় শামসুল হকেরও অধিকার আছে বলে আমি মনে করি।
মানবরু বেগমের বড় মেয়ে সালেহা বেগম বলেন,আমার মায়ের পা ভেঙ্গে গেলে আমরা যখন মায়ের চিকিৎসার জন্য দিশেহারা হয়ে টাকার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছিলাম তখন আমার বড় ভাই শামসুল হক আমাদের কোন রকম সহযোগীতা করে নাই।পরবর্তিতে এলাকার গন্যমান্যদের দিয়ে তাকে বলানো হলে তিনি মাত্র ২১০০ টাকা দিয়ে পাঠান।যা আমার মায়ের চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট ছিলো না।পরবর্তিতে আমার বড় ভাই শামসুল হক ব্যাতীত ৫ ভাই বোনের সম্মতিক্রমে মুনসুর আলীর কাছে আমার মা তার বাড়ির ২০ শতক জমি বিক্রয় করে তার চিকিৎসা করান।আমার মা এখন মৃত্যু পথযাত্রী। এখন পর্যন্ত একটিবারও আমার বড় ভাই শামসুল হক আমার মাকে কোন সাহায্য সহযোগীতা করতে আসে নাই।
মানবরু বেগমের মেঝো ছেলে নুরু মাতুব্বার জানান,আমার মা নিজের চিকিৎসা খরচ যোগানোর জন্য মুনসুরের কাছে জমিটি বিক্রয় করেছেন।আর এতে ৫ ভাইবোনের সম্মতি ছিলো।
উক্ত জমির মালিক মানবরু বেগম জানান,একটা দুর্ঘটনায় আমার পা ভেঙ্গে গেলে আমার ৬ ছেলে মেয়ের সবাই আমার চিকিৎসা খরচ বহনে অপরাগতা প্রকাশ করে।পরবর্তীতে আমি আমার নাতি মুনসুরের কাছে আমার ১ নং চৌহদ্দির ২০ শতক জমিটি বিক্রয় করে আমার চিকিৎসার খরচ যোগানোর ব্যবস্থা করি।এতে আমার ৫ ছেলে মেয়ের সম্মতি ছিলো।কিন্তু আমার বড় ছেলে তৎকালীন আমার চিকিৎসা খরচ দেবার ভয়ে আমার আশে পাশে আসত না।বর্তমানে সে ইচ্ছে করে উক্ত জমিটি জোর করে দখল করে রেখেছেন।আর আমি তাকে কখোনই উক্ত জমিটি দলিল করে দেই নাই। তার কাছে থাকা দলিলটাতে আমার কোন স্বাক্ষর বা টিপসহি নাই।