চসিক সূত্র জানায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চসিকের বছরে পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় ছিল ২৯৪ কোটি ২৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা দাঁড়িয়েছে ৩৫৩ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। পাঁচ বছরের ব্যবধানে ব্যয় বেড়েছে ৫৮ কোটি ৭৯ লাখ ৫০০০ টাকা। এর সাথে যোগ হয়েছে উন্নয়ন প্রকল্পের ম্যাচিং ফান্ড। কিন্তু থোক বরাদ্দ বাড়েনি। অন্যান্য খাতেও আয় বাড়েনি বললেই চলে। যেকারণে একজন স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী অবসরে গেলে আনুতোষিক পর্যন্ত পরিশোধ করা সম্ভব হয় না।
এমনকি চসিকের নিজস্ব অর্থায়নে কোন উন্নয়ন প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করলে ঠিকাদাররা দরপত্র কিনতে আগ্রহও দেখান না। তাছাড়া অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োজিত দক্ষ শ্রমিকদের বেতন দৈনিক ৬০০ টাকা করার জন্য সরকারি নির্দেশনা থাকলেও সিটি কর্পোরেশন অর্থাভাবে তা করতে পারেনি। এখানে বেশিরভাগ শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন। তাদেরকে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বেতন দিলে একেকজনের মাসিক বেতন হবে ১৮ হাজার টাকা। বর্তমানে চসিক দেয় তার অর্ধেক। অর্থাৎ তাদের যথাযথ বেতন দিলে চসিকের বাৎসরিক খরচ আরো কয়েক কোটি টাকা বেড়ে যাবে।
১৯৮৮ সালের জনবল কাঠামোতে ৩১৮০ টি পদ রয়েছে। বর্তমানে স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন ২৯৪১ জন। বাকিরা অবসরে গেছেন। এছাড়া ৪১০৩ জন অস্থায়ী এবং ৩০০০ জন অস্থায়ীভিত্তিতে ডোর টু ডোর কর্মসূচির পরিচ্ছন্ন কর্মী রয়েছে।
২০১৬ সালের এপ্রিলে চসিককে ১০৪৬টি নতুন পদ সৃষ্টির অনুমোদন দিয়েছিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সৃষ্ট পদগুলোর বেতন ‘স্কেল ভেটিং’ ছাড় না হওয়ায় নিয়োগ দেয়া যায়নি।
জনবল নিয়োগের সেই জট খুলে ২০১৯ সালে নিয়োগ বিধি অনুমোদনের মাধ্যমে। তবে ওইসব পদ এখনো পূরণ করতে পারেনি চসিক। এরপর বর্তমান ও ভবিষ্যতের চাহিদার আলোকে ৯ হাজার ৬০৪ জনের একটি পূর্ণাঙ্গ জনবল কাঠামো অনুমোদনের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানো হয়। সেটি এখনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে বর্তমানে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলে ৯ হাজার ৩৩৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন।
এদিকে, মেধাশূন্য হয়ে পড়ছে সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল শাখা। প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান অবসরে যাওয়ার পর বিদ্যুৎ বিভাগে দেশের খ্যাতনামা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা আর কোন বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার এই বিভাগে নেই। কেউ কেউ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ডিগ্রি নিয়েছেন। পুরকৌশল শাখায়ও দীর্ঘ দিন ধরে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। যে কয়েকজন বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার রয়েছেন তাদের সবাই আগামী কয়েক বছরের মধ্যে অবসরে যাবেন। উপ-সহকারী প্রকৌশলীরা ডিপ্লোমা প্রকৌশলী হিসেবেই স্থায়ী কিংবা অস্থায়ীভাবে যোগদান করেছেন। তাদের কেউ কেউ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি পাশ করলেও ডিজাইন কিংবা কাজের পরিকল্পনা করার মত সক্ষমতা বা দক্ষতা তাদের নেই।
সমস্যা রয়েছে পরিচ্ছন্ন বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং রাজস্ব বিভাগেও। রাজস্ব বিভাগে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ডেপুটেশনে এসেছেন। সম্প্রতি চসিকের ইতিহাসে প্রথমবারের মত ডেপুটেশনে একজন বিসিএস কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যেখানে অতীতে সাধারণ একজন কর আদায়কারি পদোন্নতি পেয়ে রাজস্ব কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এছাড়া পরিচ্ছন্ন বিভাগে অধিকাংশ কর্মচারী অস্থায়ী হওয়ায় কাজের প্রতি তাদের আন্তরিকতা কম। অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার সময় খালি হাতেই যেতে হয়। আর্থিক সংকটের কারণে স্থায়ী কর্মকর্তাদের অবসরজনিত আর্থিক সুবিধা পেতে কয়েক বছর ধরে চসিকের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়। স্বাস্থ্য বিভাগ চলছে কোন রকমে। একসময় মেমন মাতৃসদন হাসপাতালের খুব সুনাম ছিল। এখন তা হারাতে বসেছে।
প্রয়োজনে নিতে হবে ধনাঢ্য ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা
মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন।
সাবেক প্রশাসক, চসিক
প্রধান সমস্যা হল দক্ষ জনবলের অভাব। মানসম্পন্ন টেকসই সেবা দেয়ার মত জনবল চসিকে নেই। একজন এক পদে নিয়োগ পেয়ে কাজ করে অন্য পদে। একারণে যতটুকু সক্ষমতা আছে ততটুকু সেবা দিতে পারছে না। প্রতিষ্ঠানটির আয় বাড়ানোর পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি বন্ধে কঠোর হতে হবে। যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত করছে তাদের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে কাজ থেকে বিরত রাখতে হবে। শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। এই দুই খাতের সেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসক এবং শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। সার্ভে করে যাচাই-বাছাই করে প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবেই সেবার মান নিশ্চিত হবে।
চসিকের সামর্থে না কুলালে প্রয়োজনে সমাজের ধনাঢ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সহযোগিতা নিতে হবে। সহযোগিতা পাওয়ার জন্য কোন প্রতিষ্ঠানের কি অবস্থা তার সঠিক চিত্র তুলে ধরতে হবে। অফিসে কেউ দিনের ১২টায় এসে রাত ১২ পর্যন্ত অফিস করলে জনগণের কোন লাভ নেই। নির্ধারিত সময়ে এসে নির্ধারিত সময়ে বের হয়ে যেতে হবে। যারা ভাল কাজ করেন তাদের পুরস্কার এবং যারা খারাপ করবে তাদের তিরষ্কার করতে হবে। দুর্নীতি শতভাগ দমন করা সম্ভব নয়, দুধের সাথে পানি মেশাতে পারে, কিন্তু পানির সাথে দুধ মেশালে তা আর পানযোগ্য থাকে না। এই প্রতিষ্ঠানের আইনগত সীমাবদ্ধতাও আছে। চসিককে সহযোগিতা করার নীতিমালা থাকলেও সব সংস্থা যথাযথভাবে করে না। ডাকলে নিম্নপদের কাউকে পাঠিয়ে দেয়। কোন জবাবদিহিতা নেই। সমন্বয় নেই। শহরের অনেক মন্ত্রী এমপি আছেন। তাদের সাথে মেয়রের গভীর সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া চট্টগ্রামের অনেক সন্তান আছেন যারা সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে তাদের চট্টগ্রামের স্বার্থে কাজে লাগাতে হবে।
এম মনজুর আলম।
সাবেক মেয়র, চসিক
দায়িত্ব পালনকালে তিনি কখনো কোন বাধা পাননি বা সীমাবদ্ধতা ছিল না উল্লেখ করে বলেন, আমি জেনুইন মানুষ ছিলাম। প্রপার ওয়েতে কাজ করেছি। সবাই আমাকে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেছে। এটি স্থানীয় সরকারের অধীন একটি সংস্থা। এখানে সিটি কর্পোরেশন এক্টে যতটুকু কভার করে ততটুকু কাজ করেছি। এর বাইরে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে কাজ করেছি। তৎকালীন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম যে সহযোগিতা দিয়েছিলেন তা নজিরবিহীন। আইনের ভিতরে থেকে কাজ করতে গেলে কোন বাধা থাকে না। সেসময় আর্থিক সীমাবদ্ধতা ছিল আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদারহস্তে তাঁর দুয়ার খুলে দিয়েছেন। তার সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। বহদ্দারহাট বারৈপাড়া খাল খনন প্রকল্পও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে দিয়েছিলেন উল্লেখ করে বলেন, ৬০ কোটি টাকা ভূমি অধিগ্রহণের জন্য জমা দিয়েছিলাম। সময়ের অভাবে বাকি কাজ করতে পারিনি। সহযোগিতার জন্য চট্টগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। অভিনন্দন জানাই।
মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী।
সাবেক মেয়র, চসিক
চসিক একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। তাদের নিজস্ব আয়ের ব্যবস্থা আছে। এই আয় কিভাবে বাড়াবে এবং আদায় করবে তাদেরকেই সিদ্ধান্ত এবং পরিকল্পনা নিতে হবে। সরকার মাঝেমধ্যে থোক বরাদ্দ দেয়। তবে প্রকল্পভিত্তিক বরাদ্দ চাওয়া উত্তম। সড়ক উন্নয়ন এবং সংস্কারের জন্য তাদের যে অর্থ বরাদ্দ থাকে তার ব্যয় যেন অত্যন্ত স্বচ্ছতার মাধ্যমে হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। সাধারণ সভায় অডিট করে তা প্রকাশ করা উচিত। চসিকের আয়-ব্যয় নিয়ে তথ্য প্রকাশ করলে ভাল। তাদের এত দেনা, কিভাবে দেনা হল, কিভাবে সেই দেনা পরিশোধ করবে তার কিছুই মানুষ জানে না। এর থেকে উত্তরণের জন্য নাগরিক সংলাপ করা যেতে পারে। চসিকের কি সম্পত্তি আছে তার একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে পারেন মেয়র। বর্তমান মেয়র যেহেতু জনমুখী প্রকল্প করার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন, তার উচিত হবে ব্যয় সংক্রান্ত স্বচ্ছতা রাখা। তিনি বলেন, ‘আমি যখন মেয়র ছিলাম একজন মন্ত্রী যে পরিমাণ অর্থ অনুমোদন করতে পারতেন, আমিও সেই পরিমাণ অর্থাৎ তিন কোটি টাকা অনুমোদন করতে পারতাম। এখন মন্ত্রীর অর্থ সংক্রান্ত ক্ষমতা বেড়েছে। কিন্তু মেয়রের বাড়েনি। এখন মেয়র ইচ্ছে করলে প্রকল্প অনুমোদনের জন্য মন্ত্রীর যে ক্ষমতা সে ক্ষমতা পাওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করতে পারেন’।
কথায় কথায় আয়বর্ধক প্রকল্পের কথা বলা হয়। বাস্তবে বুঝতে হবে এটা লায়বেলিটি না এসেট। কারণ এটা জনগণের টাকা। আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহণ করে তা যদি বুমেরাং হয়, লোকসান হয় তাহলে হবে না। তাই প্রকল্প গ্রহণের আগে সম্ভাব্যতা যাচাই করতে হবে। জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। আয়ের উৎসসমূহ হতে আয় সংগ্রহের জন্য চেষ্টা করতে হবে। বন্দরের কাছ থেকে এক শতাংশ অর্থ পাবে, তা বড় কথা নয়। ব্যয়ে স্বচ্ছতা থাকতে হবে। মেয়র একটি কমিটি গঠন করে প্রতিটি প্রকল্পের ব্যয়ের হিসাব সাধারণ সভা এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করতে পারেন। দুর্নীতি যাতে গ্রাস করতে না পারে সেই বিষয়ে কঠোর হতে হবে।
সিটি কর্পোরেশন আইনে অনেক কিছু দেয়া আছে। ভালভাবে পড়ে দেখলে নিজস্ব উদ্যোগে অনেক কিছু করার সুযোগ আছে।
১৯৯৩ সালে বিএনপি সরকার সংসদে আইন পাস করে মেয়রের ক্ষমতা খর্ব করে দেয়। সেসময় বন্দর, সিডিএ, ওয়াসার চেয়ারম্যান, পিডিবি’র প্রধান প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রধানদের প্রতিমাসে সাধারণ সভায় এসে জবাব দিতে হত। কমিশনাররা তাদেরকে নানা প্রশ্ন করতেন। বর্তমানে দুই ধরনের কাউন্সিলর আছেন। সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর। ওই সময় অফিসিয়াল কমিশনারও ছিল। অর্থাৎ তিন ধরনের কমিশনার ছিলেন। কমিশনারদের ভোটে মেয়র নির্বাচিত হতেন। যা এখনো কলকাতা সিটি কর্পোরেশনে আছে। মেয়রকে যদি সরকার ক্ষমতা না দেয়, তাহলে মেয়র পদ রাখার কি দরকার।
স্থপতি আশিক ইমরান।
নগর পরিকল্পনাবিদ সিডিএ বোর্ড সদস্য
সিটি কর্পোরেশন এক্ট অনুযায়ী মেয়রের ক্ষমতা খুবই সীমিত। আর্থিক সংকট আরেকটি বড় সমস্যা। আর্থিক সংকট থাকলে কোন সংকটই সমাধান করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। মেয়রের প্রধান কাজ সড়ক সংস্কার, সড়কবাতি এবং পরিচ্ছতা। মেয়র যেহেতু নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, তাই তার কাছে মানুষের প্রত্যাশাও বেশি। সাধারণ মানুষের ধারণা নেই যে, মেয়রের ক্ষমতা এত সীমিত। প্রথমে মেয়রের ক্ষমতা তথা সিটি কর্পোরেশনের ক্ষমতা বাড়াতে হবে। যাতে তিনি অফিসিয়ালি ক্ষমতাপ্রাপ্ত হন। অন্যন্য সংস্থাসমূহ তার দিক নির্দেশনা মানতে হবে। না হলে তার পক্ষে কাক্সিক্ষত সেবা দেয়া সম্ভব নয়।
দেশের অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনের তুলনায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আলাদা। এখানে অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে যা নিজেদের অর্থায়নে চলে। স্বাস্থ্য সেবা আছে। তাও একইভাবে নিজস্ব অর্থায়নে চলে। মন্ত্রণালয় থেকে কোন অর্থ বরাদ্দ পায় না। এসব খাতসমূহ সমন্বয় করা প্রয়োজন। এসব প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনে মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করতে হবে। নতুবা এর জন্য আলাদা বরাদ্দ দিতে হবে। কারণ এসব খাত চসিকের জন্য অতিরিক্ত বোঝা। আশার আলো দেখা গেল যে, বন্দর তহবিল থেকে এক শতাংশ সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন কাজে প্রদান করবে। একইসাথে ইপিজেডসহ বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠান আছে। তাদের কাছ থেকেও আয়ের একটি অংশ আদায় করতে হবে। একজন সাধারণ মানুষ যে কর সিটি কর্পোরেশনকে দেয় তা একটি শিল্প কারখানা দিলে হবে না।
চসিকের কোন অর্গানোগ্রাম নেই উল্লেখ করে বলেন, সবকিছু এডহক ভিত্তিতে চলে। একেকজন কর্মকর্তা একাধিক পদ নিয়ে কাজ করেন। কারণ নিয়োগ দেয়ার সুযোগ নেই। আগামী এক দশক পর চট্টগ্রাম এই অঞ্চলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। এখানে টানেল, মিরসরাই অর্থনৈতিক জোন, আনোয়ারা অর্থনৈতিক জোন, বে-টার্মিনাল ইত্যাদি হয়ে গেলে আন্তর্জাতিকভাবে চট্টগ্রামের গুরুত্ব বেড়ে যাবে। বিদ্যমান অবকাঠামো নিয়ে চসিক তখন কাক্সিক্ষত সেবা দিতে পারবে না। মানসম্মত বসবাসের পরিবেশ দিতে না পারলে বিদেশি বিনিয়োগকারিরা এখানে থাকবেন না। এখন থেকেই সেই বিষয়টি মাথায় রেখে শহরকে সাজাতে হবে। সিডিএ এখন মাস্টারপ্ল্যান করছে। সিটি কর্পোরেশনকে তাতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এখন দেখা যাচ্ছে যে যার মত করে প্রকল্প গ্রহণ করছে। পরে আরেক সংস্থা আপত্তি দিচ্ছে। এ কারণে মেয়াদের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হচ্ছে না। ব্যয় এবং জনদুর্ভোগ বেড়ে যাচ্ছে। দিনশেষে সব দায় মেয়রের উপর বর্তায়। শেষ কথা হল মেয়র এবং চসিকের ক্ষমতা বৃদ্ধি, নতুন অর্গানোগ্রাম অনুমোদন এবং চসিকের আর্থিক দৈন্যতা ঘুচাতে হবে। দক্ষ জনবল দিয়ে চসিককে সাজাতে হবে।