নিজস্ব প্রতিবেদক,রাঙ্গুনিয়া,চট্টগ্রাম:-
প্রায় যানবাহন শূন্য সড়ক, স্বল্প সংখ্যক খোলা দোকান এবং পুলিশের কঠোর অবস্থানের মধ্য দিয়ে সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথম দিন কেটেছে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায়। চট্টগ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া- রাউজান সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন শামীম দিনভর মাঠে অবস্থান করে লকডাউন নিশ্চিতে পুলিশি তৎপরতা তদারক করেন। এসময় উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে অনেক যানবাহনকে মামলা, জরিমানা এবং আটক করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার (১৪ এপ্রিল) সকাল থেকেই রাঙ্গুনিয়ায় লকডাউন কার্যকরে মাঠে সক্রিয় ভূমিকা পালন শুরু করে পুলিশ। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়েছে, অভিযানও চালাতে দেখা গেছে। এসব চেকপোস্টে গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের পরিচয় এবং রাস্তার বের হবার কারণ জিজ্ঞেস করা হচ্ছে। যেসব পেশার মানুষ জরুরি সেবার সাথে সম্পৃক্ত তাদের চেকপোস্ট অতিক্রম করার অনুমতি দিয়ে অন্যদের ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। সকাল থেকে উপজেলার চন্দ্রঘোনা, রোয়াজার হাট, গোডাউন, শান্তির হাটসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এদিকে জনসচেতনার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে প্রচারণাও করা হয়।
সহকারী পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, দেশকে করোনার অভিশাপমুক্ত করতে লকডাউন মেনে চলার কোন বিকল্প নেই। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে সরকারের দেয়া নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। একমাত্র স্বাস্থ্যবিধি মেনে সচেতন থাকলে এই মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
এ সময় তিনি সতর্ক করে বলেন, কেউ নির্দেশনা না মানলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শও দেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
জানা যায়, বুধবার (১৪ এপ্রিল) ভোর ৬টা থেকে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ১৩ দফা কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এই আট দিন গণপরিবহন-বাস, ট্রেন, লঞ্চ, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে। সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে (কর্ম এলাকা) থাকতে হবে। শপিংমল ও অন্যান্য দোকানপাটও বন্ধ থাকবে। তবে নির্দিষ্ট সময় খোলা থাকবে ব্যাংক, কাঁচাবাজার ও নিত্যপণ্যের দোকান। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। তবে এই সময়ের মধ্যে শিল্পকারখানাগুলো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে।
শ্রমিকদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা-নেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। কৃষিশ্রমিক পরিবহন ও গণমাধ্যমসহ সব ধরনের জরুরি পরিষেবা চালু থাকবে। এদিকে, নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত ব্যাংক লেনদেন চলবে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। তবে, অন্যান্য আনুষঙ্গিক কার্যাবলি সম্পন্ন করার জন্য ব্যাংক খোলা থাকবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত।