প্রকল্পটির দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ১৪ কোটি লিটার। বর্তমানে নগরীতে ওয়াসা পানি সরবরাহ করে দৈনিক ৩৬ কোটি লিটার। শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার পুরোদমে চালু হলে ওয়াসার পানি সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়াবে দৈনিক ৫০ কোটি লিটার।
ওয়াসা সূত্র জানায়, রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা এলাকায় কর্ণফুলী নদী থেকে পানি উত্তোলন করে পরিশোধনের পর পাইপলাইনের মাধ্যমে নাসিরাবাদে রিজার্ভয়ার এবং হালিশহরে এলিভেটেড ট্যাংকের মাধ্যমে সকালে ৩০ লাখ লিটার পানি গ্রাহকদের মাঝে সরবরাহ করা হবে। এরপর ধীরে ধীরে বাড়ানো হবে পানি সরবরাহ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শেখ হাসিনা পানি সরবরাহ প্রকল্প-২ এর পরিচালক ও ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, ‘চট্টগ্রাম ওয়াসার জন্য ১৬ মার্চ আনন্দের দিন। এদিন সকালে শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার প্রকল্প-২ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রাহকদের মাঝে পানি সরবরাহ করা হবে। শুরুতে নাসিরাবাদে রিজার্ভয়ার এবং হালিশহরে এলিভেটেড ট্যাংকের মাধ্যমে সকালে ৩০ লাখ লিটার পানি সরবরাহ করা হবে। এরপর পাইপলাইনের লাইনের অবস্থা দেখে ধীরে ধীরে পানি সরবরাহ বাড়ানো হবে।’
প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, ‘চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রকল্পের ট্রায়াল রান শুরু হয়। গত সপ্তাহখানেক ধরে প্রকল্পের পানি নাসিরাবাদ রিজার্ভয়ার এবং হালিশহর এলিভেটেড ট্যাংকে নিয়ে জীবানুমুক্ত করা হয়। একই সাথে পানি সরবরাহ লাইন সব ধরনের ত্রুটিমুক্ত করা হয়েছে। সব রকমের পরীক্ষা-নিরীক্ষাশেষে মঙ্গলবার সকাল থেকে প্রকল্পের পানি নগরীতে সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে।’
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী মাসে শেখ হাসিনা পানি সরবরাহ প্রকল্প-২ চালু করতে পেরে আমরা খুবই খুশি। বৈশ্বিক করোনা মহামারির মধ্যে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সবাই অক্লান্ত পরিশ্রম করে প্রকল্পের কাজ শেষ করেছে। এটিই আমাদের বড় সাফল্য। শেখ হাসিনা পানি সরবরাহ প্রকল্প-২ ওয়াসার এ যাবতকালে বাস্তবায়নকৃত সবচেয়ে বড় প্রকল্প। ফলে প্রকল্পটির উৎপাদন ধীরে ধীরে বাড়লে নগরবাসীর পানি সমস্যা অনেকটা লাঘব হবে।
সুত্র জানায়, ২০১৬ সালে শেখ হাসিনা পানি সরবরাহ প্রকল্প-২ এর কাজ শুরু হয়। তিনটি প্যাকেজের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। প্যাকেজ-১ এর অধীনে ইনটেক ও ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ, নাসিরাবাদে রিজার্ভার এবং হালিশহরে এলিভেটেড ট্যাংক নির্মাণ করা হয়। প্যাকেজ-২ এর অধীনে ট্রান্সমিশন ও কনভেয়েন্স পাইপলাইন নির্মাণ এবং প্যাকেজ-৩ এর অধীনে নগরীর পুরাতন পাইপলাইনের পরিবর্তে নতুন পাইপলাইন বসানো হচ্ছে।
সূত্র জানায়, শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার প্রকল্প-২ ওয়াসার এ যাবতকালের বাস্তবায়নকৃত সবচেয়ে মেগা প্রকল্প। শেখ হাসিনা পানি সরবরাহ প্রকল্প-১ ও মদুনাঘাট শেখ রাসেল পানি সরবরাহ প্রকল্প চালুর পর মেগা প্রকল্পটি গ্রহণ করে চট্টগ্রাম ওয়াসা। জাপানের জাইকা, বাংলাদেশ সরকার ও চট্টগ্রাম ওয়াসার যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৪৯১ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে জাইকা ৩ হাজার ৬২৩ কোটি ২৮ লাখ, বাংলাদেশ সরকার ৮৪৪ কোটি ৮০ লাখ এবং চট্টগ্রাম ওয়াসার তহবিল থেকে ২৩ কোটি ৭ লাখ টাকা অর্থায়ন করছে।