মো:ইসমাইল,পানছড়ি প্রতিনিধি :
আজ শুনবো হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কিছু কথা-
পূর্বে বাংলাদেশ নামে কোনো রাষ্ট্র ছিলো না।ছিলো না বাংলাদেশ নামের অস্থিত্ব। পাকিস্তান নামক একটি রাষ্ট্র ছিলো।রাষ্ট্রটি দুটি খন্ডে বিভক্ত ছিলো।একটি পূর্ব পাকিস্তান,অন্যটি পশ্চিম পাকিস্তান। সে রাষ্ট্রের ভেতরের মানুষগুলি দুটি ভাষায় কথা বলতো। পূর্ব পাকিস্তানিরা কথা বলতো বাংলায়,আর পশ্চিম পাকিস্তানিরা বলতো উর্দুতে।
ভাষা দুটি হলেও শাসন করতো উর্দু ভাষাগোষ্ঠীর শাসকরা।উর্দুরা বাঙালীদের দিয়ে কাজ করিয়ে নিজ ভরণ-পোষণ করতো খুবই জমজমাট আকারে।তারা বাঙালীদের যেকোনো জিনিসের মূল্য দিতো খুবই কম।যা দ্বারা একটি বাঙালী পরিবারের জীবন চলা অসম্ভব।
একদা তারা চাইলো বাংলা ভাষাকেও উর্দু করতে। কিন্তু বাঙালীর বীর সাহসী সৈনিকরা বড্ড ক্ষেপেছে।তারা কখনো উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মেনে নিতে পারবেনা।
পরোক্ষনে পাক হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালীর উপর ঝাপিয়ে পড়ে।শহীদ হয়-সালাম,জব্বার,বরকত রফিক,প্রমুখ।এতেই পাক বাহিনীরা ক্ষ্রান্ত হয়নি! তারা ধাপে ধাপে বাঙালীদের উপর অত্যাচার আরো বৃদ্ধি করতে থাকে।
এক পর্যায়ে ৭ই মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক আন্দোলনের ডাক দেন।লক্ষ লক্ষ বাংলার মানুষ তার ডাকে সারা দেয়।
মাত্র ১৯ মিনিটের এক ভাষণ। বঙ্গবন্ধু তার তেজস্বী ভাষণে পাকিস্তানের ২৩ বছরের রাজনীতি ও বাঙালিদের বঞ্চনার ইতিহাসের ব্যাখ্যা, পাকিস্তান রাষ্ট্রের সঙ্গে বাঙালিদের দ্বন্দ্বের স্বরূপ উপস্থাপন, অসহযোগ আন্দোলনের পটভূমি বিশ্লেষণ ও বিস্তারিত কর্মসূচি ঘোষণা, শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যা সমাধানে তাঁর সর্বাত্মক চেষ্টা, সারা বাংলায় প্রতিরোধ গড়ে তোলার নির্দেশ, প্রতিরোধসংগ্রাম শেষাবধি মুক্তিযুদ্ধে রূপ নেওয়ার ইঙ্গিত, শত্রুর মোকাবিলায় গেরিলাযুদ্ধের কৌশল অবলম্বন, যেকোনো উসকানির মুখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার পরামর্শদান ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরার পর তিনি ঘোষণা করেন: “ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে। রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশা আল্লাহ।..এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।”
তার ডাকে সারা দিয়ে বাঙালীরা ঝাপিয়ে পড়ে যুদ্ধে।যার যা কিছু আছে তা নিয়েই তারা যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়া শুরু করলো।
১১টি সেক্টরের মাধ্যমে শুরু হয় যুদ্ধ পরিচালনা।দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর ১৬ই ডিসেম্বর বাঙালীরা বিজয় অর্জন করে বাংলাদেশ নামে একটি রাষ্ট্র গঠন করে।শুরু হয় বাঙালীর নতুন যাত্রা, নতুন সূচনা।
তবে হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানিরা যেন ছাড় দেয় নি।কুচক্রি মহলের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু সহ তার পরিবারকে হত্যা করা হয়।১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে সেনাবাহিনীর একদল সদস্য সামরিক অভ্যুথান সংঘটিত করে এবং শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডি ৩২-এর বাসভবনে সপরিবারে হত্যা করে।
স্বাধীন বাংলার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১ তম জন্মদিনে তাহার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাহার জন্য রইলো এক বুক ভরা ভালোবাসা।
“হে স্বাধীন বাংলার শ্রেষ্ট বাঙালী, তুমি চলে গেছো ওপারে অথচ দেখো মানবের মনের গহীনে তুমি আজো যেন জীবিত। মানুষ তোমায় দিনের পর দিন কেমন করে স্মরন করে।তুমি আছো বুকের ভেতর, এভাবেই থাকবে।”