চট্টগ্রামে বায়েজিদ এলাকায় জালিয়াতির মাধ্যমে মসজিদ ও কবরস্থানের জন্য নির্ধারিত জমিতে প্লট সৃষ্টি করে বরাদ্দসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে চট্টগ্রামের চার সাংবাদিক, তাদের স্ত্রীসহ নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আদালতের নির্দেশে তদন্ত শেষে দুদক প্রধান কার্যালয়ের অনুসন্ধান ও তদন্ত-৫ এর উপ-পরিচালক মো. আনোয়ারুল হক গত ২৪ নভেম্বর মামলা করার নির্দেশ দেন।
পরদিন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক মো. আবু সাঈদ বাদি হয়ে মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- চট্টগ্রাম সাংবাদিক কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুব উল আলম, সাবেক সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আহমেদ, সাবেক কোষাধ্যক্ষ শহীদ উল আলম, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক নির্মল চন্দ্র দাশ, তার স্ত্রী তপতী দাশ, শহীদ উল আলমের স্ত্রী তসলিমা খানম, নিজাম উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হোসনে আরা, প্লট ক্রেতা মো. সেলিম ও হুমায়েরা ওয়াদুদ।
মামলার বাদি দুদকের সহকারী পরিচালক আবু সাঈদ বলেন, “পারস্পরিক যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে নকশাবর্হিভূত প্লট সৃষ্টি এবং মিথ্যা লে আউট করে তা পরে বরাদ্দ দেওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আদালতের নির্দেশে তদন্ত শেষে মামলাটি করা হয়েছে। দুদক মামলাটি তদন্ত করবে।
মামলায় মসজিদ ও কবরস্থানের জন্য বরাদ্দ জমিতে প্লট সৃষ্টি করে স্ত্রীদের নামে বরাদ্দ, মিথ্যা নকশা প্রণয়ন, প্লট হস্তান্তর ফি সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির বরাবরে নগরীর বায়েজিদ থানার শেরশাহ এলাকায় সরকারি বরাদ্দকৃত জমিতে এই প্লট জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে বলে এজাহারে উল্লেখ আছে।
সাংবাদিকদের আবাসন সমস্যা নিরসনের জন্য আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৯৮২ সালে সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসন বায়েজিদ থানার ষোলশহর মৌজার ওই ১৬ একর জমি সোসাইটিকে লিজ দেয়।ভূমি উন্নয়ন ও প্লট সৃজন শেষে সোসাইটির সিদ্ধান্ত অনুসারে ১৯৯২ সালের ১৬ জুন ১০৯টি প্লট উল্লেখ করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) কাছে নকশা অনুমোদনের আবেদন করা হয়।অনুমোদনের পর সিডিএ সোসাইটির সে সময়ের সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আহমেদের কাছে নকশা হস্তান্তর করে। এরপর সোসাইটির বার্ষিক সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে ১০৮টি প্লট সমিতির সদস্যের বরাদ্দ দেওয়া হয়। একটি প্লট বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানির কার্যক্রম তদারকির জন্য রাখা হয়।এরমধ্যে সাংবাদিক মাহবুব উল আলম, নিজাম উদ্দিন আহমেদ, শহীদ উল আলম ও নির্মল চন্দ্র দাশ প্রত্যেকে পাঁচ কাঠা পরিমাণের একটি করে প্লট বরাদ্দ ও রেজিস্ট্রি পান।এরপর ১৯৯৪-৯৭ মেয়াদে সোসাইটির চেয়ারম্যান পদে মাহবুব উল আলম, সম্পাদক পদে নিজাম উদ্দিন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ পদে শহীদ উল আলম এবং যুগ্ম সম্পাদক পনে নির্মল চন্দ্র দাশ নির্বাচিত হন।
চট্টগ্রাম মহানগরীর শেরশাহ এলাকায় চট্টগ্রাম সাংবাদিক কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি এলাকা। এখানেই নকশা বর্হিভূত প্লট বরাদ্দের অভিযোগে চার সাংবাদিকসহ নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। পরে নকশা বর্হিভূত তিনটি প্লট তিন সাংবাদিক শহীদ উল আলম, নির্মল চন্দ্র দাশ ও নিজাম উদ্দিন আহমেদের স্ত্রীদের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়। যদিও তারা সোসাইটির সদস্য নন।চট্টগ্রামে প্লট জালিয়াতি করায় চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা।