বান্দরবান প্রতিনিধি:
বান্দরবানে তিনটি ব্যাংকে ডাকাতি, অস্ত্র লুট ও ব্যাংক ম্যানেজার অপহরণের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। রাষ্ট্রের যা যা করণীয় তাই করবে। সেনাবাহিনীর,বিজিবি,পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ফোর্স আরো বৃদ্ধি করা হবে।
আজ শনিবার (৬ এপ্রিল) সকালে রুমায় ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুটের ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বান্দরবান সার্কিট হাউস মিলনায়তনে বিকাল ৩টায় এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, বান্দরবানের জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যথেষ্ট ধৈর্য্য সহকারে শান্তির আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল। আলোচনা চলা অবস্থায় আলোচনায় না গিয়ে তারা তাদের অবস্থান জানান দিতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অস্ত্রের মহড়া দেওয়া আর সহ্য করা হবে না। এলাকা শান্তি বজায় রাখতে যা যা করার তাই করব।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে তিনটি জেলা শান্তির একটা পরিবেশ এখানে ছিল। এ এলাকার বাসিন্দা, নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি ও সরকার মিলে সুন্দর একটা পরিবেশ তৈরি করেছে। এ এলাকার সৌন্দর্য শুধু দেশের নয়, বিদেশী পর্যটকসহ সারাবিশ্বে পরিচিত। এমনই একটা সময়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তাদের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও সামরিক বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছে। সবাই মিলে একটা যৌথ অভিযান চালানো হয়। কোনো ধরনের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে, চাঁদাবাজকে আমাদের এই ভূখণ্ডে অন্যায় অপকর্ম করতে দেওয়া হবে না।
বিদেশের কোনো মদদ আছে কি-না এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, এ ধরনের কোনো তথ্য আমরা পায়নি। যারা এ ঘটনা ঘটিয়ে বিদেশে গিয়েও আশ্রয়ে নিয়ে থাকে তাদেরকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে এনে দেশের মাটিতে বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বান্দরবানের সাংসদ বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, বিজিবি প্রধান মেজর জেনারেল মোঃ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, আনসার ভিডিপি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক, পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম, বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা, বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন ও সরকারি উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাতে তারাবি নামাজের সময় বান্দরবানের রুমা শাখা সোনালী ব্যাংক ও আশেপাশের এলাকা ঘিরে ফেলে শতাধিক সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যরা। মসজিদ থেকে ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে ধরে নিয়ে ব্যাংকের ভেতরে মারধর করে তারা। পরে তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ সময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ৮টি চাইনিজ রাইফেল, ২টি এসএমজি, ৪টি শটগান ও ৩৮০ রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনার ১৬ ঘণ্টা পর থানচিতে আরও দুটি ব্যাংকে ডাকাতি করে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে অপহৃত সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিনকে রুমা বেথেল পাড়া থেকে উদ্ধার করে র্যাব।