নিজস্ব প্রতিবেদক:
দূর্নীতির অভিযোগে ম্রো আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ ৩জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
হয়েছে।
পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালিত “টেকসই
সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পে “ আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী বাদী
হয়ে রাঙামাটি চীফ জুডিসিয়াল আদালতে মামলাটি
দায়ের করেন।
মামলার আসামীরা হলে — বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের ম্রো আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (১) মো: মহিন উদ্দিন, সহকারী শিক্ষক (২) এ কে এম আবুল হাসান চৌধুরী ও পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালিত টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের প্রোগ্রাম অফিসার (৩) মো: বোরহান উদ্দিন ।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, র্পাবত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালিত “টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান প্রকল্পের” অধীনে ০৪(চারটি) আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয় যথাক্রমে রাজস্থলী আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়, ম্রো আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়, রুমা উপজাতীয় আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয় ও আলীকদম আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয় ৪(চার)টি বিদ্যালয়ের জন্য স্বাক্ষরিত স্মারক —২৯.২৩১.০০১.০০.১৫০.২০১৮-৪৭১ মূলে ২৭/১২/২০১৮ইং তারিখ মূলে অফিস আদেশের মাধ্যমে এমপিও ভুক্ত ও নন এমপিও ভুক্ত ০১—৪৮জন শিক্ষক ও ৪৯- ৯৬জন কর্মচারীদের নিয়োগ দেয়া হয়।
মামলার বাদী বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী রুমা উপজাতীয়
আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়ে সঙ্গীত শিক্ষক পদে চাকুরী
মেয়াদ শেষ হওয়ায় বিগত ২০/০৩/২০২৩ইং তারিখ
অফিস আদেশ স্মারক নং — ৩০৬৮(ক), অনুযায়ী ১৪/০৩/২০২৩ইং তারিখে অবসরে যান।
মামলার নথি অনুযায়ী আরো জানা যায়, মামলার
আসামীরা প্রকল্পটির অধীনে ০৪(চার) টি আবাসিক
বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকগণ ও কর্মচারীদের স্বার্থ ও
সুবির্ধাথে প্রত্যেকের নিকট হতে গ্র্যাচুইটির বা এককালীন পেনশন এর ১২% করে টাকা উত্তোলন করে “শিক্ষক
কর্মচারী কল্যাণ তহবিল” গঠন করার প্রস্তাব দিলে সকল শিক্ষক ও কর্মচারীরা তাতে সম্মতি দেয়।
এরই ধারাবহিকতায় মামলার ১ ও ২নং আসামীরা গত
২০১৮ সাল হতে বিভিন্ন সময়ে সকল শিক্ষক ও
কর্মচারিদের কাছ থেকে ১২% হারে টাকা সংগ্রহ করা শুরু করে।
শেষে সকল শিক্ষক ও কর্মচারীদের জানায় হিসাব অনুযায়ী র্সবমোট ৫০,০০,০০০/(পঞ্চাশ লক্ষ) টাকা জমা হয়েছে। তহবিলের সম্পূর্ণ টাকা সোনালী ব্যাংক লিমিটেড,পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন র্বোড শাখা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় যৌথ হিসাব চালু করা হবে জানালে সকল শিক্ষক ও কর্মচারীরা ১ ও ৩নং আসামীদের বিশ্বাস করে সম্মতি দেয়।
গত ১০/০৪/২০১৮ইং তারিখে “টিচার স্টাফ ওয়েল ফেয়ার ফান্ড”নামে রাঙামাটি শাখা সোনালী ব্যাংকে
সঞ্চয়ী হিসা— ৫৪২৩৯০১০০৫১০৮, রাঙামাটি শাখা কোড নং— ৫৪২৩৯, রাউটিং নং- ২০০৮৪০৫২৩ নম্বরে ১নং আসামী মো: মহিন উদ্দিন, ও ২নং আসামী মো: বোরহান উদ্দিন দুইজন যৌথ সঞ্চয়ী হিসাব চালু করে।
পরবর্তীতে ২৬/১২১/২০২৩ইং তারিখ শিক্ষক ও কর্মচারীরা
ব্যাংকে জমাকৃত টাকার হিসাব চাইলে যৌথ স্বাক্ষরকারী আসামী মো: মহিন উদ্দিন, ও মো: বোরহান উদ্দিন ব্যাংক বিবৃতি দেখাতে বাধ্য হয়।
ব্যাংক বিবৃতিতে দেখা যায় বিগত ১০/০৪/২০১৮ ইং হতে ২৬/১২/২০২৩ইং তারিখ পর্যন্ত মোট ব্যাংক জমা সর্বমোট ১২,১৮,১০১ (বারো লক্ষ আঠারো হাজার একশত এক) টাকা এবং ব্যাংক থেকে উত্তোলণ করে খরচ করা হয় ১২,১৯,২২১/— ( বারো লক্ষ ঊনিশ হাজার দুইশত একুশ) টাকা। অবশিষ্ট প্রায় ৩৮,০০,০০০ (আটত্রিশ লক্ষ) টাকার হিসাব চাইলে আসামীগণ বাদীর সাথে অশোভন আচরণ করেন। সরাসরি বাদীকে অবশিষ্ট টাকাগুলো ফেরত দিতে পারবে না ও বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এ অবস্থায় তহবিলের সকল সদস্য মানসিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বাদী বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী অভিযোগ করে আরো বলেন,
আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে পূর্বপরিকল্পিত ও
ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন নথি তৈরি করে অবৈধভাবে তহবিলের একাউন্ট থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এ ব্যাপারে মামলার আসামী মো: মহিন উদ্দিন, এ কে এম আবুল হাসান চৌধুরী ও মো:বোরহান উদ্দিন নিকট জানতে চাইলে জানান, ঘটনাটি সর্ম্পূণ মিথ্যা ও বানোয়াট আমাদেরকে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে হয়রানি করার জন্য এই মামলাটি করা হয়েছে।
ম্রো আবাসিক প্রধান শিক্ষক বলেন, এ রকম অভিযোগটি সম্পূর্ণ ডাহা মিথ্যা কথা।তবে “শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ তহবিল”গঠন বিষয়টি সত্য।রাঙামটিতে ব্যাংকএকাউন্ট খোলা হয়েছিলো এটাও সত্য।কিন্তু শিক্ষক ও কর্মচারিদের কাছ থেকে ১২% হারে নয়
শুধু ২% হারে টাকা উত্তোলন করে ব্যাংকে জমা করা হয়।পরবর্তীতে সবার সিদ্ধান্তক্রমে ৪(চার) টি আবাসিক
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সমন্বয়ে ও তহবিলের সবার সম্মতিক্রমে গত ১৭/০৯/২০২৯ ইং তারিখে ১১,৪০,০০০ (এগারো লক্ষ চল্লিশ হাজার) টাকা উত্তোলণ করে ৪টি
আবসিক উচ্চ বিদ্যালয়েরে প্রধান শিক্ষকদের হাতে তুলে
দেয়া হয়।যাতে যার যার বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীরা জমাকৃতনিজ অংশের পাওনা টাকা গুলো পাই।তাছাড়া শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাংকের সব হিসেবের কাগজপত্র ও তথ্য সব আছে যা বিজ্ঞ আদালতে পেশ করার জন্য প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।