মিজানুর রহমান সবুজ,দিঘীনালা প্রতিনিধি,খাগড়াছড়ি
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কাজের সিডিউলকে তোয়াক্কা না করে নিয়মবহির্ভূতভাবে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। খোদ উপজেলা পরিষদ চত্বরে এমন অনিয়মের ঘটনা ঘটলেও স্থানীয় প্রশাসনের যেন নেই কোনো দায়। আর এর মাধ্যমে মসজিদ ভবনের স্থায়িত্ব ও মান নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এছাড়াও কাজ শুরুর পূর্বে বিল উত্তোলনেরও অভিযোগ রয়েছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।
খাগড়াছড়ি গণপূর্ত অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ‘প্রতিটি জেলা, উপজেলায় একটি করে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন’ প্রকল্পের আওতায় খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় তিনতলা মডেল মসজিদ নির্মাণের জন্য প্রায় ১১ কোটির অধিক টাকা প্রকল্প হাতে নেয়া হয়।
নির্মাণকাজে দ্বায়িত্ব থাকা ম্যানেজার সুজিত নন্দী বলেন, কাজটি এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরার থেকে ক্রয় করে গৌরী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছেন। কয়েকমাস থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ কাজ শুরু করে।
মঙ্গলবার বিকেল ৫ ঘটিকায় উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন দীঘিনালা মডেল মসজিদের নির্মাণাধীন কাজের স্থানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জং ধরা রডের ব্যবহার ও বেইজের সিসি ঢালাইয়ে সিলেকশন বালুর পরিবর্তে লোকাল বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সহ গণপূর্ত বিভাগের কোন প্রকৌশলীকে উপস্থিত পাওয়া যায়নি। এ সময় নির্মাণকাজের মিস্ত্রি মনির হোসেন বলেন, “দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী ২ ঘন্টা আগেই চলে গেছে।”
এ বিষয়ে দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী সুমিত মজুমদারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার অনুপস্থিতিতে নির্মাণকাজ পরিচালনা করার সুযোগ নেই। আমি এখনই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে কাজ বন্ধ করতে বলছি। তাছাড়া কাজের শুরুতেই বিল উত্তোলনের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেননা বলে জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, নির্মাণকাজে শুরু থেকেই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। একটি মসজিদ নির্মাণ কাজে যারা দূর্নীতি করে তাদেরকে কিভাবে নির্মাণকাজের দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়?
এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার রাজিব নন্দী মুঠোফোনে কোন কথা বলতে রাজি হননি।
দীঘিনালা মাইনী বালুমহালের ম্যানেজার রাজন ত্রিপুরা বলেন, দীঘিনালা মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত লোকাল বালু আমাদের বালুমহাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়।
দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আরাফাতুল আলম বলেন, প্রকৌশলীর অনুপস্থিতিতে নির্মাণকাজে ঢালাই দেওয়ার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবো।
খাগড়াছড়ি গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনওয়ারুল আজিম বলেন, বেইজের সিসিতে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।