মো. রবিউল হোসেন:- খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়কে মানিকছড়ি উপজেলার একমাত্র বাসস্ট্যান্ড মহামুনির যাত্রী ছাউনীটি দখল করে রেখেছে স্থানীয় ফল ব্যবসায়ীরা। সকাল-সন্ধ্যা যাত্রী ছাউনিতে বখাটে যুবকদের আড্ডা থাকায় স্কুল পড়ুয়া কিশোরী ও নারীযাত্রীরা রাস্তার পাশে নিরুপায় দাঁড়িয়ে থেকে গাড়ীর অপেক্ষা করতে হয়! দীর্ঘদিন বাসস্ট্যান্ডের যাত্রীছাউনিটির অপব্যবহার হলেও কেউই বিষয়টি নিয়ে ভাবার সময়ও পাচ্ছে না!
সরজমিনে দেখা গেছে, খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়কের মানিকছড়ি ও লক্ষীছড়ি উপজেলার মানুষজন নিয়মিত বাস বা অটোরিকশায় কোথাও যাতায়াত করতে হলে মানিকছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক নির্মিত এই যাত্রীছাউনিতে অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এই যাত্রীছাউনির দু’পাশে ৬/৭ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পসরা বসিয়ে মৌসুমি ফল-ফলাদি বেচাকেনার জমজমাট আসর গড়ে তোলেছেন। আর যাত্রীছাউনির ভিতরে বখাটে ছেলেরা বসে মাদকের আড্ডায় মেতে উঠে! এবং কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতে দ্বিধা করে না।ফলে যাত্রীছাউনিতে স্কুল/কলেজ পড়ুয়া কোন কিশোরী কিংবা নারীরা বসার সুযোগ হয়ে উঠেনা! ঝড়-বৃষ্টির সময়ও নারীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়ীর জন্য অপেক্ষা করতে হয়!
যাত্রীদের ভোগান্তির কথা স্বীকার করে মৌসুমী ফল দোকানী মো. শাহজাহান জানান, ‘আমরা ৫-৬ জন এখানে ফলের ব্যবসা করছি। আমাদের দোকানের কারণে ছাউনীতে যাত্রীরা মালামাল নিয়ে আসতে, যেতে ও অবস্থান করতে কিছুটা সমস্যা হয়। আমাদের নির্দিষ্ট কোন ব্যবসার জায়গা না থাকায় আমরা দীর্ঘ ১ যুগেরও বেশি সময় ধরে এখানে ব্যবসা করে আসছি’।
আলী আজম বলেন, ‘এখানে ব্যবসা করতে কোন টাকা পয়সা কিংবা দোকান ভাড়া লাগেনা। ক্রেতাও মেলে ভালো। তাছাড়া বৃষ্টির সময় আমাদের মালামাল ও ফলের ক্যারেট যাত্রী ছাউনীতে রেখে বিক্রি করতে পারি। তাই এই স্থানটিতে আমরা বেছে নিয়েছি’।
শনিবার (১৩ মে) বিকেলে তথ্য সংগ্রহকালে নিয়মিত চট্টগ্রাম যাতায়াতকারী জনৈক মহিলাযাত্রী নাম প্রকাশ না করে বলেন, নারীযাত্রীরা এখানে মোটেও নিরাপদ নয়! এখানে বসার বিন্দু মাত্র পরিবেশ কখনও দেখিনি। যাত্রীছাউনির ভিতরে বখাটের আড্ডা, অশ্লীল শব্দ, বাইরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সিগারেটের গন্ধে রাস্তায় দাঁড়ানোও কষ্টকর।
এ প্রসঙ্গে বাসস্ট্যান্ড এলাকার/ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. আইয়ুব আলী বলেন, যাত্রীছাউনি ঘিরে বখাটে যুবকদের আড্ডা ও অশ্লীলচয়ণের পাশাপাশি কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বেচাকেনায় কিশোরী ও নারী যাত্রীদের সমস্যার বিষয়টি সত্য। অচিরেই বিষয়টি সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ও.সি) আনচারুল করিম বলেন, রাস্তায় যাতায়াত করা যাত্রীদের সুবিধার্থেই যাত্রীছাউনি। এটা ফল ব্যবসায়ী কিংবা বখাটেদের আড্ডার জায়গা না। আমি বিষয়টি এই প্রথম জানলাম। যাত্রীছাউনি ঘিরে কোন বখাটের আড্ডা কিংবা এটি বেদখলের বিষয়ে খুব শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।