মো. রবিউল হোসেন:- খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর আমের মুকুল বেশি আসলেও আবহাওয়া বিপর্যয়ের কারনে ঝড়ে পড়ছে অপরিপক্ক আম বা আমের গুটি। এ অবস্থায় ফলন বিপর্যয়ের পাশাপাশি আমের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় এ অঞ্চলের আমচাষি, বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। আর হতাশ না হয়ে বাগান মালিকদের আমগাছের গোড়ায় পানি সেচ, নিয়মিত পরিচর্যা ও বালাইনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি বিভাগ।
জানা গেছে, চলতি আম মৌসুমের শুরুতে বাগানগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ আমের মুকুল এসেছিল। হটাৎ ঘন কুয়াশা, তাপদাহ, শিলা বৃষ্টি ও মেঘলা আবহাওয়ায় অনেকটা নষ্ট হচ্ছে আমের গুটি। আর এবছর ৮০-৯০ ভাগ ফলনের আশা নিয়ে বুক বেঁধেছিলো মানিকছড়ির আমচাষিরা। কিন্তু কিছুদিন ধরে বৈরী আবহাওয়ায় ঝরে পড়ছে আমের গুটি। যদিও কেউ কেউ রাতদিন সেচ ও স্প্রে করে চেষ্টা করছেন আমগুলোকে বাঁচানোর। শুরু থেকে পরিচর্যা না করায় বেশি ঝড়ছে দেশি আমের গুটি। ফলে এবছর আম উৎপাদন নিয়ে সঙ্কা প্রকাশ করছে চাষিরা।
সরেজমিনে বিভিন্ন আম বাগান ঘুরে চাষি ও বাগান মালিকদের সাথা কথা হলে তারা জানান, চলতি মৌসুমে প্রচুর আমের মুকুল আসলেও পরবর্তী বৈরী আবহাওয়া, কুয়াশায় মহা (ছত্রাকনাশক রোগ) লেগে অনেক মুকুল নষ্ট হয়ে যায়। আর গুটি আসার পর প্রচন্ড তাপদাহে এবং শিলাবৃষ্টি ও পানির অভাবে প্রতিটি আমবাগানে বিপুল পরিমান আমের গুটি ঝরে পড়েছে। সামনের দিনগুলোতে আরও কয়েকদিন এ আবহাওয়া অব্যাহত থাকলে আরও আমের গুটি ঝরে পড়ার আশংকা করছেন তারা। এ অবস্থায় চলতি মৌসুমে আমের ভবিষ্যৎ কি হবে? তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় এ অঞ্চলের আম চাষিরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মহি উদ্দিন আহম্মদ জানান, চলতি মৌসুমে জেলার ৪৫০ হেক্টর জমির বাগানে ৩০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আমের গুটি ঝরে পড়ার বিষয়ে গাছের গোড়ায় পানির সেচ এবং বালাই ব্যবস্থাপনার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে আমচাষীদের। তবে, চলতি মৌসুমে শতভাগ গাছে মুকুল আসলেও বৈরী আবহাওয়ার কারনে তা গুটি থেকেই নষ্ট হচ্ছে। এরপরও কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনে পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসিনুর রহমান বলেন, বর্তমানে রোদ ও গরমের কারণে যে গুটি ঝরছে সেটা স্বাভাবিক। চাষি ও ব্যবসায়ীদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। বেশি গুটি ঝরলে গাছে পানি সেচ দিতে হবে। সাধারণত চারটি কারণে আমের গুটি ঝরে। এর মধ্যে পুষ্টির অভাব, পোকার আক্রমণ, রোগের আক্রমণ ও ধারণ ক্ষমতার বেশি হলে। তবে বড় ধরনের ঝড় বৃষ্টি না হলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তারপরও গাছে পানি দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।