নিউটন চাকমা, কাউখালীঃ
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার স্বরূপ আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ৪র্থ ধাপে আজ (২২ মার্চ) সারাদেশের ন্যায় রাঙামাটিতে জেলা সদর, বাঘাইছড়ি, লংগদু, নানিয়ারচর, বরকল, রাজস্থলী, জুরাছড়ি ও কাউখালী উপজেলা সহ মোট ৪৩৯টি গৃহের নির্মাণ কাজ সুসম্পন্ন করে রাঙামাটি জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গনে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গৃহ প্রদানের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাঙামাটির জেলা সহ সারাদেশে সর্বমোট ৩৯,৩৬৫ হাজার পরিবারকে স্থায়ীভাবে মাথা গোঁজার স্থায়ী ঠিকানা আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনের মাধ্যমে এসব পরিবারকে একযোগে ঘরের চাবি ও অন্যান্য দ্রব্যাদি হস্তান্তর করা হয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে রাঙামাটির কাউখালী উপজেলায় গৃহ ও বাস্তুভিটাহীন স্থায়ী বসবাসের ঠিকানা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বরূপ আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ৪র্থ ধাপে আরও ৪১টি পরিবার পেলেন একটি সেমি পাকা ঘর সহ ও ২ শতক জমি।
এই প্রকল্পের দায়িত্বরত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, কাউখালী উপজেলার ১নং বেতবুনিয়া ইউনিয়ন, ২নং ফটিকছড়ি ইউনিয়ন, ৩নং ঘাগড়া ইউনিয়ন ও ৪নং কলমপতি ইউনিয়নের সর্বমোট ৪টি ইউনিয়নের ভূমি ও গৃহহীনদের বরাদ্ধকৃত ৪১টি ঘর নির্মাণ কাজ ইতিমেধ্য সম্পন্ন করা হয়েছে। এমনকি নির্বাচিত ও যাচাই-বাছাইকৃত ভূমি-গৃহহীনদের নামে ঘরের দলিলও বরাদ্ধকৃত গৃহহীনদের মাঝে হস্তান্তরের জন্য তৈরি কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরপরই এসব দলিল সহ সবকিছু গৃহহীনদের মাঝে তুলে দেয়া হবে।
সংশ্লিষ্টদের সুত্রে জানাগেছে, ১নং বেতবুনিয়া ইউনিয়নে ১১টি, ২নং ফটিকছড়ি ইউনিয়নে ৫টি, ৩নং ঘাগড়া ইউনিয়নে ১৪টি ও ৪নং কলমপতি ইউনিয়নে ১১টি। ৪টি ইউনিয়নে সর্বমোট ৪১টি গৃহহীন পরিবারকে ঘরের চাবি ও দলিল পত্রাদি হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, বিগত এই প্রকল্পের আওতায় পৃথক পৃথক ভাবে কাউখালী উপজেলায় ৪টি ইউনিয়নে মোট ১০৯টি গৃহহীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ঘরের চাবি তুলে দেয়া হয়।
এদিকে, কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা সাদিয়া নুরীয়া জানান,প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ নির্মাণ চলাকালে সরেজমিনে উপস্থিত থেকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীনদের ঘর তৈরীর কাজ রক্ষণাবেক্ষন ও ঠিকাদারের গাফিলতি আছে কিনা কিংবা নিম্নমানের ইট, বালু ইত্যাদি মালামালের ঘাটতি রয়েছে কিনা সবদিকে মনিটরিং করেছি। এসময় মনিটরিং কাজে পুরো টিমের সদস্যরাও অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। আশা করছি এই প্রথম কাউখালী উপজেলাতে সদ্য বদলি হয়ে আসাটা কিছুটা হলেও অবহেলিত মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে পারাটা সার্থক হয়েছে বলে মনে করি। এসব বাস্তুভিটা হারা ও গৃহহীনদের প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অনেক জায়গায় যেতে হয়েছে। আশা করছি আগামীতেও যতদিন এই উপজেলায় আছি, ততোদিন সবার সাথে কাজ করে যাব। কেননা, সাধারণ মানুষ যদি একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারলেই তাহলে ভাববো আমার জীবনের কাজটি সার্থক হয়েছে।
ঘাগড়ার শামুকছড়ি ও বেতবুনিয়ায় ইউনিয়নের মারমা পাড়াতে গিয়ে সদ্য সরকার কর্তৃক ঘর ও জমি পাওয়া কয়েকজন গৃহহীনদের সাথে কথা হলে তারা জানায়, দীর্ঘদিন বছরের পর বছর রোদ, বৃষ্টি ও শীতে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। আজ এসব সেমি পাকা ও জমি পেয়ে অনেক অনেক খুশী ও আত্নহারা। জীবনে কোন দিন কল্পনা ও স্বপ্নে ভাবতে পারিনি যে, আমাদের সরকার এভাবে ঘর ও জমি উপহার দিবেন। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য সবসময় দোয়া করছি। পাশাপাশি আগামীতেও পুনঃবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জয়লাভ করুক সেজন্য সর্বাত্বক প্রার্থনা করছি।
বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে এই বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পে-২ এর আওতায় এসব দালানকোঠার সেমি পাকা ঘরগুলো সার্বক্ষণিক মনিটরিং এর মাধ্যমে স্থায়ী ও টেকসই ভাবে মালামাল ব্যবহার করে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় সকল কার্যক্রম জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক নজরদারি সহ জেলা ও উপজেলা মনিটরিং টিমের সার্বক্ষণিক তদারকিতে যথাযথ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এই প্রকল্পের একটি সেমি পাকা ঘর ও ২ শতক জমি সহ দুই লাখ ৮৪ হাজার ৫শত টাকা ব্যয়ে ২ রুম বিশিষ্ট সহ টয়লেট ও রান্নাঘর নির্মাণ করা হয় বলে জানান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ ফজলুল করিম।