জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগের পর এবার বিএনপির পদও ছাড়লেন আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। তিনি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। তাঁর ছেলে মাঈনুল হাসান ভূঁইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। ১১ ডিসেম্বর তিনি জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এই শূন্য আসনে উপনির্বাচন হবে।
আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দলটির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তিনি পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। একবার টেকনোক্র্যাট হিসেবে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ১৯৭৯ সালে প্রথম তৎকালীন কুমিল্লা-১ (নাসিরনগর ও সরাইলের একাংশ) ও বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। ওই সময়ে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি ছিলেন। দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। এরপর ১৯৯১ সালে এবং ১৯৯৬ সালের দুটি সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০০১ সালের নির্বাচনে চারদলীয় জোটের শীর্ষ নেতা ইসলামী ঐক্যজোটের তৎকালীন মহাসচিব মুফতি ফজলুল হক আমিনীকে আসনটি ছেড়ে দেন আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। ওই সময়ে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার গঠন করলে তাঁকে টেকনোক্র্যাট প্রতিমন্ত্রী করা হয়।
২০১৮ সালের নির্বাচনে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া ধানের শীষ প্রতীকে বিজয়ী হন। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তে ১১ ডিসেম্বর সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। তাঁর ছেড়ে দেওয়া আসনে উপনির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছে।
আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার মুঠোফোনে কল করা হলে ধরেন তাঁর ছেলে মাঈনুল হাসান ভূঁইয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বাবা প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে আছেন। তাঁর বয়স হয়েছে। তা ছাড়া আমার বাবা টানা ২৭ বছর জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। তিনি দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। দলের সিদ্ধান্তে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু গত নির্বাচনের পর থেকে কেন্দ্রীয় ও জেলা বিএনপির কোনো ব্যাপারেই তাঁকে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করা হয় না।
নিজ উপজেলা কমিটি গঠনের ব্যাপারেও তাঁর বাবার পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে কল করলেও ধরেন না। তাই সম্মান থাকতে আমার বাবা দল থেকে পদত্যাগ করেছেন।’
তাঁর বাবা আসন্ন উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন কি না, জানতে চাইলে মাঈনুল হাসান বলেন, ‘এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত এখনো আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি।’