মো. রবিউল হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার:- শন আর পলিথিনে মোড়ানো ছোট্ট একটি ঝুপড়ি ঘরে স্ত্রী আর তিন সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছিলেন খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার বাটনাতলী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হত-দরিদ্র দিনমজুর আলী আশ্রাফ। মানুষিক ভারসাম্যহীন স্ত্রী আর ছোট্ট তিন সন্তান নিয়ে কখনো খেয়ে আবার কখনো না খেয়েই দিন চলতো আলী আশ্রাফের। স্থানীয়দের সহযোগিতায় চলতো তার সংসার। জরাজীর্ণ, ভাঙা, লক্কর-ঝক্কর ঝুপড়ি ঘরে মারাত্মক দুর্ভোগের মধ্যে মানবেতর জীবনযাপনের চিত্র তুলে ধরে সংবাদ প্রকাশের পর নজরে আসে স্থানীয় প্রশাসনের। এরপর সরেজমিনে পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রক্তিম চৌধুরী। তিনি জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানতে পারেন এই পরিবারের কারোরই নেই কোন নাগরিক সনদপত্র কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র। ফলে সরাসরি কোন সরকারি সুযোগ সুবিধা পায়নি এই পরিবার।
এরপর স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সকলের জন্মসনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরী করে প্রধানমন্ত্রীর উপহার সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর প্রদান করা হয় আলী আশ্রাফকে। শুধু ঘরই নয়, ইউপি সদস্য আবুল হাসেমের উদ্যোগে জনপ্রতিনিধি, বিত্তশালী ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় পেয়েছেন ঘরের সকল আসবাবপত্র (খাট, আলনা, চেয়ার, টেবিল), খাদ্য সামগ্রী, পরিধেয় বস্ত্র, শীতবস্ত্র, কম্বল, বিভিন্ন প্রসাধনী, হাঁড়ি-পাতিল, তৈসজপত্র, ও সৌর বিদ্যুৎ সুবিধাসহ শতাধিক আইটেমের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে ফিতা কেটে ও মিস্টি বিতরণের মধ্যদিয়ে আলী আশ্রাফের নতুন ঘর ও অন্যন্য জিনিসপত্র পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রক্তিম চৌধুরী। এসময় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহিম, স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মমিন, আবুল হাসেমসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। সরকারি সহায়তায় আধা পাকা বসবাসের বাড়ি, পাকের ঘর, আসবাবপত্র ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হত-দরিদ্র এই পরিবারটি। এ যেন এক খুশির বন্যা বইছে।
আবেগাপ্লুত আলী আশ্রাফ বলেন, ‘আমি কখনোই ভাবিনি আমার পরিবার নিয়ে পাকা ঘরে বসবাস করতে পারবো। এটি আমার কাছে স্বপ্নের মতো ছিলো। আাজ আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি’।
ইউএনও রক্তিম চৌধুরী বলেন, উপজেলার প্রকৃত অসহায়দের যাচাই বাচাই পূর্বক প্রধানমন্ত্রীর উপহার সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর প্রদান করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে আলী আশ্রাফকে ঘর প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিত্তশালীরা যেভাবে আলী আশ্রাফের পাশে দাড়িয়েছে সত্যিই তা প্রশংসার দাবিদার। উপজেলার প্রতিটি প্রকৃত সুবিধাবঞ্চিত ও অসহায় পরিবার যাতে নাগরিক সুবিধা পায় সে অনুযায়ী কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন।