লায়ন ডা. বরুণ কুমার আচার্য বলাই:
আধ্যাত্ম শরাফতের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র ফটিকছড়ি মাইজভাণ্ডার শরিফে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) ও বিশ্বঅলি শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.)-এর ৩৪তম মহান ২৬ আশ্বিন ওরশ শরিফ গাউসিয়া হক মনজিলে মহাসমারোহে সম্পন্ন হয়েছে।
মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও বাংলাদেশে প্রবর্তিত বিশ্বসমাদৃত একমাত্র ত্বরিকা ‘ত্বরিকা-ই-মাইজভাণ্ডারীয়া’র উজ্জ্বল নক্ষত্র, আওলাদে রাসুল (দ.) শাহানশাহ নামে খ্যাত, বিশঅলি নামে সমাদৃত, বিশ্বঅলি শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.)-এর ৩৪তম মহান ২৬ আশ্বিন ওরশ শরিফ গাউসিয়া হক মনজিলে মহাসমারোহে সম্পন্ন হয়েছে।
এতে সভাপতিত্ব করেন সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মাইজভাণ্ডারী (ম.) বলেন, মহান ২৬ আশ্বিন ওরশ শরিফের ৮দিন ব্যাপী কর্মসুচির প্রধান দিবস, এবারের ২৬ আশ্বিন অত্যন্ত নতুন গুরুত্ব নিয়ে এসেছে যে মাহে রবিউল আউয়াল একই সাথে আমরা উদযাপন করতে পারছি ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) এবং পহেলা রবিউল আউয়াল শাহানশাহ বাবাজানের চন্দ্রবার্ষিকী ওরশ মোবারক। ১৯ রবিউল আউয়াল অছিয়ে গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র চন্দ্রবার্ষিকী ওরশ মোবারক, ২১ আশ্বিন উম্মুল আশেকীন মা মুনাওয়ারা বেগমের ওফাতবার্ষিকী সবকিছু মিলেয়ে অত্যন্ত বরকতময় কিছু সময় আমরা অতিবাহিত করতেছি, তার জন্য আল্লাহ রব্বুল আলামীনের দরবারে অগণিত শুকরিয়া। তিনি বলেন, হুজুর গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারীর ত্বরিকতের যে খুছুছিয়ত এই প্রসঙ্গে কিছু বাহ্যিক কিছু বক্তব্য হয়ত অনেক সময় আমাদেরকে চিন্তিত করে কিন্তু আমরা যারা মাইজভাণ্ডারী ত্বরিকতের শিক্ষায় আর্দশে আমরা অনুপ্রাণিত আমরা যখনি এই বিষয়গুলো নিয়ে ভাবায় আমরা ভাবি আদালতের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে, একজন আদেল হিসেবে, আমরা যারা বিরূপ মন্তব্য করে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বুঝার চেষ্টা করি এবং আমরা যে অবস্থান এই অবস্থানের হাকিকতও এটিও বুঝার বিবেচনা করে দুইটির তারপরে আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। এই দৃষ্টিভঙ্গিতে যখন আমরা দেখি আমরা বুঝতে পারি যে পৃথিবীতে সবার দৃষ্টিভঙ্গি সবার বুঝার ক্ষমতা সবার উপলব্ধি এক নয়। আর কাজে কাজে কেউ যদি বিরোপ মন্তব্য করলেও কিংবা কোন ত্বরিকতের কোন বিষয়ে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলেও আমরা দুই দৃষ্টিকোণ থেকে সেটিকে আমরা বুঝতে হবে। একটি হচ্ছে এটি তার সীমাবদ্ধতা তারপর জ্ঞানের বোধবুদ্ধিগত সীমাবদ্ধতা আরেকটি হচ্ছে এটি তার আল্লাহ রব্বুল আলামীন প্রদত্ত অধিকার। পৃথিবীর সবাইত একভাবে চিন্তা করবে না, ভাবতে পারবে না, আল্লাহ রব্বুল আলামীন এই বৈচিত্র মানুষের মাঝে দিয়ে দিছেন সে তার জায়গা থেকে চিন্তা করছে এটির কারণেত সে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কিন্তু সেতো এমন না যে সে মুসলিমের কাতার থেকে চলে যাচ্ছে সেরকমটি নয়। আমরা যে ত্বরিকতের আমলগুলো, আচরণগুলো, খাসভাবে মাইজভাণ্ডারীরা করে থাকি গুরুত্ব দিয়ে থাকি আমরা বলি এই অনুষঙ্গ, আবার কোন সময় বলতে পারি এগুলো অনুষঙ্গ নয়, এগুলো গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। অর্থাৎ লবণ খাবারের মধ্যে একটি অনুষঙ্গ নয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ এটি খাবারকে কমপ্রিলিট করে এটি আমাদের যে পুষ্টিগ্রহণ ক্রিয়াকে এটিকে সহায়তা করে। সেভাবে আমাদের ত্বরিকতের কিছু আমল যেগুলো অনেকে বিতর্ক করে থাকে আমরা তাদেরকে এই দৃষ্টিকোণ থেকে কিছুটা এসকিয়ুস করি। ঠিক আছে সে তার মতো করে ভাবছে এটিতে আমার চিন্তা করার কিছু নেই এইজন্য নেই যে আমরাতো যে ত্বরিকতের আমল গুলো আমরা ত্বরিকতের আমল হিসেবে আমরা আদায় করার চেষ্টা করি আজকেও আমরা করেছি ছেমা মাহফিল এই ধরনের ত্বরিকতের যে আমল আকাইদ গুলো আছে খাস যে বিষয় গুলো আছে এই বিষয় গুলো আমাদের কে সর্ত্তায়ন করেছে কারা সর্ত্তায়ন করেছে আজকে যে আলোচনা হয়েছে আলেম যে শ্রেণি আলেম বিল্লাহ অ বে আমরিল্লাহ। অর্থাৎ গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারীর ত্বরিকতের মাঝে যে আমল আছে এগুলো সার্টিফায় হয়েছে গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারী সার্টিফায় করেছেন। গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারী কে আলেম বিল্লাহ অ বে আমরিল্লাহ। হযরত আমিনুল হক ফারহাদাবাদীকে আলেম বিল্লাহ অ বে আমরিল্লাহ ও আবদুল গণি কাঞ্চনপুরী (র.) কে আলেম বিল্লাহ অ বে আমরিল্লাহ। প্রত্যাকে কাজে কাজে একজন আলেম বিল্লাহ অ বে আমরিল্লাহ যখন আলেম বিল্লাহ অ বে আমরিল্লাহর বিষয়টি বুঝতে না পারেন তখন আমরা বুঝতে পারি এটি তার বুঝার পক্ষে সম্ভব নয়। আলেম বিল্লাহ অ বে আমরিল্লাহ হয়নি তার মধ্যেতো আলেম বিল্লাহ আছে আলেম বিল্লাহ হতে পারেনি। আলেম বিল্লাহ, আরেফে রব্বানীগণ, যে গুলো নিয়ে সার্টফায় করে, হুজুর গাউসুল আযম যে গুলো সার্টিফায় করেছেন সেই ত্বরিকতের আমল, আকায়দের উপর আমরা সন্তুষ্ট আছি আল্লাহ রব্বুল আলামীন আমাদের কে এই অবস্থার মধ্যে কবুল করেনিন, আমিন।
আশীষ বাণী শেষে আখেরী মোনাজাত করেন করেন রাহবারে আলম সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মাইজভাণ্ডারী (ম.)। ফরদুল আফরাদ, খাতেমুল অলদ, গাউসুল আযম হযরত মাওলানা শাহসুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র প্রপৌত্র, অছিয়ে গাউসুল আযম মাওলানা শাহসুফি সৈয়দ দেলাওয়ার হোসাইন মাইজভাণ্ডারী(ক.)’র প্রথম পুত্র, মারাজাল বাহরাইন, বিশ্বঅলি শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.)-এর ৩৪তম মহান ২৬ আশ্বিন উরস শরিফ ১১ অক্টোবর ২০২২ইং রোজ মঙ্গলবার আওলাদে রাসুল (দ.) শাহজাদায়ে গাউসুল আযম, বিশ্বঅলি শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র একমাত্র পুত্র ও সাজ্জাদানশীন, মাওলা হুজুর, রাহবারে আলম, মোজাদ্দেদে জামান, হযরত শাহসুফি সৈয়দ মোহাম্মদ হাসান মাইজভাণ্ডারী (ম.)’র সদারতে সারাদিন ও সারারাত ব্যাপী গাউসিয়া হক মনজিলে মহাসমারোহে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে সম্পন্ন হয়েছে। ওরশ শরিফের দিন সকালে ফজরের নামাজের পরে বিশ্বঅলি শাহানশাহ হযরত শাহসুফি সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র রওজা শরীফে মিলাদ কিয়াম, দরূদ শরিফ, গোসল শরিফ, গিলাফ ছড়ানো, আতর ছিটানো, পুষ্প মালা অর্পনের পর মাইজভাণ্ডারীয়া ত্বরিকার প্রবর্তক, গাউসুল আযম মাওলানা শাহসুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র রওজা শরীফ, গাউসুল আযম বিলবেরাসত মাওলানা শাহসুফি সৈয়দ গোলামুর রহমান (ম.)
মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র রওজা শরীফ, অছিয়ে গাউসুল আযম মাওলানা শাহসুফি সৈয়দ দেলাওয়ার হোসাইন মাইজভাণ্ডারী (ক.), বিশ্বঅলি শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র মাজার শরিফ জেয়ারত করেন। এছাড়া সকাল ৮ টা হতে বিশ্বঅলি শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র মাজার শরিফে কুরআন তেলাওয়াত, জিকির, বিভিন্ন ক্যাম্পে জিকরে ছেমা মাহফিলসহ আগত ভক্ত জায়েরীনগণ ইবাদত বন্দেগির মধ্যে রত থাকেন। ওরশ শরিফের দিন রাত ১০ টায় গাউসিয়া হক মনজিলের শান্তিকুঞ্জ মাঠে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল জিকরে ছেমা মাহফিল অনুষ্ঠিত । মাহফিলে দেশবরেণ্য ওলামায়ে কেরামগণ আলোচনা করেন। মাহফিলের শুরুতে মাওলানা মোহাম্মদ মুজিবুক হক সাহেব ‘বেলায়ত নবুয়ত’ নিয়ে আলোচনা করেন।মাওলানা হাফেজ আবুল কালাম সাহেব ‘নারী সুফিদের জীবন কথা ঃ প্রেক্ষিত উম্মুল আশেকীন মা মুনাওয়ারা বেগম (র.) ‘ জীবনী নিয়ে আলোচনা করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ড.মাওলানা মোহাম্মদ জাফর উল্লাহ ” আলেম বিল্লাহ অ বে আমরিল্লাহর পরিচয়” নিয়ে আলোচনা করেন। চরণদ্বীপ দরবার শরিফের শাহজাদা মাওলানা মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ ফারুকী ” বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় ঐতিহাসিক মদিনা সনদের প্রয়োগ প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করেন। বিশ্বঅলি শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.)এর শানে আজমত নিয়ে আলোচনা করেন মাওলানা সৈয়দ আহমদুল হক মাইজভাণ্ডারী।৷ আরো আলোচনা করেন মাওলানা মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন মাইজভাণ্ডারী, মাওলানা মিনহাজ উদ্দীন। মাহফিলে মিলাদ ও কিয়াম করেন শাহানশাহ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র রওজা শরীফের সাবেক খাদেম মাওলানা এস এম এম সেলিম উল্লাহ সাহেব।
এসময় অনন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, শাহানশাহ হক ভাণ্ডারী(ক.)’র সম্মানিত আত্মীয় স্বজনগণ, মাইজভাণ্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি কেন্দ্রীয় কমিটি নেতৃত্ববৃন্দ, বিভিন্ন শাখা কমিটির প্রতিনিধিগণ, আশেকানে গাউসুল আযম মাইজভাণ্ডারী, গোলামানে শাহানশাহ হক ভাণ্ডারীগণসহ জাতি, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণির মানুষ।এদিকে ওরশ শরীফে গত কয়েকদিন আগে থেকে আশেক ভক্ত আসতে শুরু করেছে। মুখরিত হয়ে উঠছে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফ। এছাড়া ওরশ শরীফ কেন্দ্র করে বসেছে গ্রামীণ লোকমেলা।