তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে ৩০৩ রান তুলেও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। আজ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করে তুলেছে ২৯০ রান। তবে ব্যাটিং উইকেটে ধারহীন বোলিং নিয়ে এই সংগ্রহে যে জেতার জন্য যথেষ্ট নয় সেটা আর একবার বুঝিয়ে দিল জিম্বাবুয়ে।
ওয়ানডেতে ৯ বছর পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ হারল বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ের মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের নেতৃত্ব টানা পাঁচ ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ হারল বাংলাদেশ।
ওয়ানডেতে ৯ বছর পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ হারল বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ের মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের নেতৃত্ব টানা পাঁচ ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ হারল বাংলাদেশ।
রোববার (৭ আগস্ট) হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে আগে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ২৯০ রান তোলে তামিম ইকবালের দল। পরে সিকান্দার রাজ্জা ও রেগিস চাকাভার দুর্দান্ত দুটি সেঞ্চুরিতে ৪৭.৩ ওভারেই পাঁচ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে জিম্বাবুয়ে।
বোলিংয়ে নামার আগে বাংলাদেশ চাপেই ছিল। কারণ আগে ম্যাচে ৩০৩ রান করেও জেতা যায়নি, আজ সংগ্রহ ছিল তার চেয়েও ১৩ রান কম। চাপ কমাতে শুরুর দিকে দারুণ কিছু করতেই হতো। মোস্তাফিজুর রহমানের চোটে একাদশে ডাক পাওয়া হাসান মাহমুদ নতুন বলে সেই প্রত্যাশা পূরণ করলেনও।
১৩ রানের মাথায় উইকেট তুলে দুই নেন হাসান। নতুন বলে উইকেট দখলের লড়াইয়ে মেহেদি হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলামও শামিল হলেন বলে ৪৯ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। জিম্বাবুয়ানদের ব্যাটিং লাইনআপের গভীরতাও বেশি ছিল না। ফলে সিরিজে সমতায় ফেরার বিষয়টি অনুমিতই মনে হচ্ছিল।
কিন্তু তারপর সিকান্দার রাজার ঠান্ডা মাথার ব্যাটিং আর রেগিস চাকাভার পাল্টা আক্রমণ আর সামলাতে পারেনি বাংলাদেশ। দুজনের জুটি জমে গেলে বাংলাদেশি বোলাররা আলগা বোলিং করেছেন অনেক। নিজেদের মাঠে সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছেন দুজন।
পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১৬৯ বল খেলে ২০১ রান তুলেছেন রাজা-চাকাভা। তবে এই জুটি ভাঙতে পারত অনেক আগেই। সিকান্দার রাজা ব্যক্তিগত ৪২ রানে থাকার সময় তাকে রান আউটের সুযোগ মিস করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। সেই সিকান্দারই টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করে জিম্বাবুয়েকে জেতালেন আরেকবার।
শেষ পর্যন্ত ১২৭ বল খেলে ৮টি চার ৪টি ছয়ে ১১৭ রানে করে অপরাজিত ছিলেন। জিম্বাবুয়েকে জয়ের কাছাকাছি রেখে মাত্র ৭৫ বলে ১০২ রান করে ফিরেছেন রেগিস চাকাভা। জিম্বাবুয়ান অধিনায়ক চার মেরেছেন ১০টি, ছক্কা ২টি।
শেষ দিকে টনি মুনিয়োঙ্গার ১৬ বলে ৩০ রানের ঝড় আগেভাগেই জিতিয়েছে জিম্বাবুয়েকে। বাংলাদেশের পক্ষে হাসান মাহমুদ ও মেহেদি হাসান মিরাজ দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। বাকি উইকেটটি তাইজুল ইসলামের।
এর আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশের হয়ে শুরুটা দুর্দান্ত করেছিলেন তামিম ইকবাল। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে ৬২ রান তোলে বাংলাদেশ, তার মধ্যে তামিম একাই করেন ৫০। কিন্তু আগ্রসী তামিমের আগ্রাসন থেমে যায় পরের ওভারেই। তানাকা চিভাঙ্গাকে লেগসাইটে উড়িয়ে মেরেছিলেন। কিন্তু বল চলে যায় সরাসরি ফিল্ডারের হাতে। ৪৫ বলে ঠিক ৫০ রানের মাথায় আউট হয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তার ইনিংসে চারের মার ১১টি।
ছয় বল পর দুর্ভাগ্যজনক রান আউটের শিকার হয়েছেন এনামুল হক বিজয়ও (২১ বলে ২০ রান)। এরপর মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত রানের গতি ঠিক রাখতে পারেননি। পাঁচে নামা মাহমুদউল্লাহও ক্রিজে গিয়ে শুরুতে ধুঁকেছেন। তবে আফিফ হোসেন ধ্রুব অন্য প্রান্তে ছিলেন দারুণ সাবলিল।
পঞ্চম উইকেটে আফিফ-মাহমুদউল্লাহ ৮২ বলে তুলেছেন ৮১ রান। দুজন যখন ক্রিজে ছিলেন মনে হচ্ছিল আজও সহজেই তিনশ পেরুবে বাংলাদেশ। কিন্তু ৪১ বলে ৪১ রান করা আফিফ রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে পয়েন্টে ধরা পরে সেই সম্ভবনা নষ্ট করেছেন। তরুণ ক্রিকেটার ইনিংসের চার মেরেছেন ৪টি।
আফিফ দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেওয়ার মূল দায়িত্ব ছিল অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহর কাঁধে। দায়িত্বটা আজ নিয়েছেনও মাহমুদউল্লাহ। শেষ দিকে খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে বড় শট খেলার চেষ্টা করেছেন। এর মধ্যে মেহেদি হাসান মিরাজ ১২ বলে ১৫ রানের ছোট একটা ইনিংস খেলে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৯০ রানে থেমেছে বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ ৮৪ বলে ৩টি করে চার ছয় মেরে ৮০ রানে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন। জিম্বাবুয়ের হয়ে ৫৬ রান খরচায় সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন সিকান্দার রাজা।