ফেসবুকে কিডনি কেনাবেচায় জড়িত সংঘবদ্ধ চক্রের হোতা শহিদুল ইসলাম ওরফে মিঠুকে পাঁচ সদস্যসহ আটক করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব)।গ্রেফতার অপর চারজন হলেন মিজানুর রহমান (৪৪), আল মামুন মেহেদী (২৭), মো. সাইমন (২৮) ও মো. রাসেল হোসেন (২৪)।
এসময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ভুক্তভোগীর সঙ্গে চুক্তির অ্যাফিডেভিট কপি, ভুক্তভোগীদের পাসপোর্টসহ মোট ১৪টি পাসপোর্ট, কিডনি ক্রসম্যাচিংয়ের বিভিন্ন দলিলাদি, দেশি-বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র ও ফটোকপি, বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই ও এটিএম কার্ড, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের জাল সিলমোহর, খালি স্ট্যাম্প, সিপিইউ, মুঠোফোন ও সিম কার্ড জব্দ করা হয়।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান র্যাব-১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন।
তিনি বলেন,সুনির্দিষ্ট তথ্যর ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে রাজধানীর ভাটারা, বনশ্রী ও মিরপুর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিডনি কেনাবেচায় এই চক্রের সাথে মোট ১৫-২০ জন জড়িত বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। তারা মূলত তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে অবৈধ কিডনি কেনাবেচা করে থাকে।এই চক্রের সদস্যরা পাশ্ববর্তী দেশে অবস্থানরত কিডনি কেনাবেচা চক্রের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে শতাধিক মানুষকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাঠিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে আটককৃতরা স্বীকার করেছে।
কর্ণেল আবদুল্লাহ আল মোমেন জানান,আটককৃত কিডনি চক্রের মূল হোতা মো.শহিদুল ইসলাম ২০১৬ সালে নিজের চিকিৎসার জন্য পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে যান।সেখানে তিনি কিডনি প্রতিস্থাপনের রোগীদের ব্যাপক চাহিদা দেখতে পেয়ে অসদুপায়ে নিজেই কিডনি প্রতিস্থাপনের অবৈধ ব্যবসা শুরু করেন। পাশের দেশ ভারতের কিডনি কেনাবেচার চক্রের সঙ্গে যোগসাজশে সে বাংলাদেশে কিডনি কেনাবেচা চক্রের সহযোগিতায় একটি দালাল চক্র প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রতিটি কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য দালাল চক্রটি রোগীপ্রতি ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা নিতেন। বিপরীতে তারা কিডনি ডোনারকে মাত্র চার থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করে অগ্রিম দুই লাখ টাকা দিতেন।গ্রেফতার ব্যক্তিরা এই চক্রের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ অবৈধ উপায়ে হাতিয়ে নিয়েছেন বলে র্যাবের বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।