কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফের লাগা আগুনে দগ্ধ হয়ে এক শিশু মারা গেছে। আগুনে পুড়ে গেছে আশ্রয়কেন্দ্রের প্রায় ৩শতাধিক ঘর। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) বিকাল ৪টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং ৫ নম্বর ক্যাম্পের বি ব্লকে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ্দৌজা নয়ন জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, এপিবিএন ও পুলিশসহ স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় এক রোহিঙ্গা শিশু দগ্ধ হয়ে মারা গেছে। তবে মারা যাওয়া শিশুর পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় ৩শতেরও বেশী ঘর আগুনে পুড়ে গেছে।
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ জানান, আগুন লাগার পর প্রথমে উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট কাজ শুরু করে। পরে কক্সবাজার থেকেও আরও দুটি ইউনিটকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠানো হয়। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।ক্ষতিগ্রস্ত উখিয়ার ৫ নম্বর ক্যাম্পের বাসিন্দা শফিউল্লাহ বলেন, আগুনে পুড়ে সব নিঃস্ব হয়ে গেছি। এখানে সাড়ে ৪০০ ঘরবাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে। সেখানে বেশ কিছু দোকানপাটও ছিল। আগুন লাগার ঘটনায় চার বছরের এক শিশু মারা গেছে।
ক্যাম্পের বাসিন্দা সাদেক ও মোঃ নুর জানান, তাদের ক্যাম্পে একটি ঝুপড়ি ঘরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বাতাস থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে আগুনে পুড়ে গেছে কয়েকশ’ ঘরবাড়িসহ দোকানপাট। আগুন লাগার ঘটনাটি দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পনা সেটি খতিয়ে দেখা দরকার।
গত ৯ জানুয়ারি উখিয়ার শফিউল্লাহ কাটা নামের একটি ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেই আগুনে প্রায় ৬০০ ঘর পুড়ে যাওয়ায় তিন হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় হারিয়েছেন। এর আগে, ২ জানুয়ারি উখিয়ার বালুখালী ২০ নম্বর ক্যাম্পের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) পরিচালিত করোনা হাসপাতালের জেনারেটর থেকেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সেই আগুনে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে গত বছরের ২২ মার্চ উখিয়ার বালুখালীতে লাগা আগুনে পুড়ে মারা গেছেন ১৫ রোহিঙ্গা। তখন ১০ হাজারের মতো ঘর পুড়ে ছাই হয়েছে।
তবে স্থানীয়দের অভিমত বার বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা, নাকি পরিকল্পিত নাশকতা? তা নিয়েও নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।