চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার রাজা দেবাশীষ রায় বলেছেন, রিজার্ভ ফরেস্ট বললে মানুষ এখন জানে যেখানে গাছপালা নেই। সবুজ হলে জোট বাগান আর ন্যাড়া হলে ভিসিএফ।
বান্দরবানে মাতামুহুরী শেষ সাঙ্গু নদীতে একটি পুকুর আছে মাত্র। একদম উত্তরে ত্রিপুরা-মিজোরাম বর্ডারে ভূয়োছড়ি, অজ্জ্যেংছড়ি আগে সেখানে কিছুটা গর্জন গাছ আছে আর প্রাকৃতিক বন নেই। তাহলে বন বিভাগ ফেল, বন বিভাগ পাস করতে পারে নাই বন রক্ষায়। বনাঞ্চলে ভিসিএফ পাস করেছে।
কাজেই আমাদের অঞ্চলের জনমানুষ জানে কিভাবে বন রক্ষা করতে হয়। যদি বন বিভাগের সাথে পার্বত্য জেলা পরিষদ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান জড়িত থেকে যৌথ হয় তাহলে প্রাকৃতিক বন কিছুটা উপযোগী করতে পারবো।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সকালে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের আয়োজনে এনেক্স ভবন সম্মেলন কক্ষে ভিসিএফ নেটওয়ার্ক কমিটি পুনর্গঠন কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বন বিভাগকেও খারাপ বলছি না, চেষ্টা করছি বন বিভাগসহ আমরা সরকারের সাথে সংলাপ করি। প্রকল্পে ভিসিএফের ভূমিকা রয়েছে। যদি পার্বত্য জেলা পরিষদ ভিসিএফগুলো প্রত্যক্ষভাবে স্বীকৃতি দিতে পারে খুবি চমৎকার। আর না হলে আমরা সার্কেল চীফরা আছি সার্কেল থেকেও আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি। যাতে অন্তত এই ভিসিএফগুলোর মধ্যে অনুপ্রবেশ রক্ষা হয় সমাজের জন্য, গ্রামের জন্য, রাষ্ট্রের জন্য প্রয়োজন।
কর্মশালায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি বক্তব্য রাখেন, জেলা পরিষদ সদস্য সবির কুমার চাকমা। এছাড়াও এসআইডি-সিএইচটি ইউএনডিপির জেলা ব্যবস্থাপক ঐশ্বর্য চাকমা, জুরাছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা, বরকল উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সূচরিতা চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্ক এর সাধারণ সম্পাদক শান্তি বিজয় চাকমা, নারী হেডম্যান কার্বারী নেটওয়ার্ক’র সাধারণ সম্পাদক শান্তনা খীসা প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
সভাপতির বক্তব্যে অংসুইপ্রু চৌধুরী বলেন, বন একটি পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের জন্য অর্থকরী, অর্থনীতির ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। যারা সেগুন গাছ ৫-১০ একর বাগান করেছে তারা হয়তো ২০-২৫ বছরে যদিও দীর্ঘ সময় লাগতে পারে এরপরেও অনেকজন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে এবং বড় ধরনের পারিবারিকভাবে লাভবান হয়েছে। সুতরাং আমরা বনকে কিভাবে সম্প্রসারিত করবো, কিভাবে সংরক্ষণ করবো, যারা রিজার্ভ ফরেস্ট এলাকায় বসবাস করে সেই সমস্ত জনবসতিগুলো যাতে তারা বনের ওপরে হাত না দেয় নির্ভরশীল হয়ে যাতে না উঠে সেজন্য তাদেরকে সহযোগিতা করে বিকল্প ব্যবস্থা করে দেয়া সময়ের দাবি বলে মন্তব্য করেন।
ইউএসআইডির পার্বত্য চট্টগ্রামের জলধারা সহ-ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম নিয়ে আলোচনায় বক্তারা প্রাকৃতিক জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাব মোকাবেলা, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ সুরক্ষা, বন উজাড় ও মাতৃবৃক্ষ সুরক্ষা। পার্বত্য এলাকায় পানির উৎস ধরে রাখা ভূমিধস ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবেলায় সচেতন করা বন নির্ভর জনগোষ্ঠীর জীবিকায়ন ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।