বান্দরবান প্রতিনিধিঃ
বান্দরবানে আগামী ৫ই জানুয়ারী শুরু হতে যাচ্ছে আসন্ন ৫ম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এরই প্রেক্ষিতে প্রতিনিধিদের থেমে নেই ভোটারদের দূয়ারে ভোট প্রার্থনা আবার এই নিয়ে চা দোকান থেকে শুরু করে চলছে বিভিন্ন স্থানে আলোচনা সমালোচনা কিংবা গণসংযোগ।
এদিকে নৌকা প্রার্থীকে বিজয়ী করতে বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রতিপক্ষের লোকজনকে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তিনি জনসম্মুখে প্রকাশ্যে প্রতিপক্ষ সতন্ত্র প্রার্থীর আনারস মার্কা বর্তমান সুয়ালক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উক্যনু মারমা ও তার সমর্থকদের হুমকি কিংবা মেরে ফেলার কথা বলেছেন।
সম্প্রতি ধারণ করা একটি ভিডিও ক্লিপে বর্তমান সদর উপজেলার চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর বিরুদ্ধে এমনই চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, ১৩ ডিসেম্বর সোমবার সুয়ালক ইউনিয়নের কাইছতলি ২নং ওর্য়াডের কমিটি গঠন করার সময় বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আলম এক বক্তব্যে সুয়ালক এলাকাবাসীরা যদি নৌকার বিরোধীতা করে তাহলে তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেন।
সেই ভাইরাল ভিডিও ক্লিপে তিনি বলেছেন, “নির্বাচনে বীর বাহাদুর নৌকাকে জিতাতে কেউ শয়তানি করলে তাহলে বুঝা যাবে তার কত ধানের কত চাল। নৌকা বিরুদ্ধে করবেন হারি কিনা জিতি (জয়) পরের কথা মামলা মোকদ্দমা যা কিছু করার দৌড়ানো দেখি কোন বাপে তাকে রক্ষা করে।”
অন্যদিকে বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আলম এমন অকার্যকলাপ বক্তব্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলেই শুরু হয় তোলপাড়। এ নিয়ে শেষে নড়েচড়ে বসেছে বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগ।
এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাদেক হোসেন চৌধুরী এক স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বান্দরবানে নির্বাচনী প্রচারণা মূলক জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি জনাব এ কে এম জাহাঙ্গীরের একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসার পর বিভ্রান্তি হচ্ছেন অনেকেই। এ ধরণের বক্তব্য আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক নিয়ম- শৃংখলা, রাজনীতি পরিপন্থী। আমরা স্পষ্ট করতে চাই, এ ধরণের বক্তব্য একান্তই জেলা আওয়ামী লীগ সহ সভাপতির ব্যক্তিগত চিন্তা ভাবনা প্রসূত। এটা কোনভাবেই আওয়ামী লীগের চিন্তা চেতনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ মতের প্রকাশ নয়, সেহেতু এ ধরণের বক্তব্যের দায় আওয়ামী লীগ নিবেনা।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানান, ব্যক্তি বিশেষের মতামতের কারণে সংগঠনের প্রতি যাতে কোনভাবেই কারো নেতিবাচক ধারণা না জম্মে এ বিষয়ে গণ মানুষের সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সবসময় সচেতন।
এদিকে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর একে এম জাহাঙ্গীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিজ আইডি থেকে এক বার্তা দিয়ে বলেন, যারা অন্যদল থেকে আওয়ামীলীগে ঢুকে দলীয় নেতাদের বৈঠকে এসে দু‘নম্বরী ভূমিকা নিয়ে দ্বিমুখী ভূমিকায় আছেন, আমার বিরুদ্ধে তারাই ফেসবুকে ছড়িয়ে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলে দাবী করেন আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি একে এম জাহাঙ্গীর।
আবার সেই ষ্ট্যাটাসে সদর উপজেলা ছাত্রলীগ এক কর্মী মন্তব্য করতে দেখা যায়, অন্যদল হতে সবচেয়ে বেশী অনুপ্রবেশ ঘটেছে সুয়ালক ইউনিয়নে। অনেকে ছল চাতুরীর মাধ্যমে দলীয় পোষ্ট বাগিয়ে নিয়েছে” তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ দিতে পারলে আপনি কি তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিতে পারবেন!
এইদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সুয়ালক ইউনিয়নে চেয়ারম্যান উক্যনু মার্মা সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গত ১৩ ডিসেম্বর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান একে এম জাহাঙ্গীর বক্তব্য যে হুমকি দিয়েছে সেটি আমার সমর্থনে মধ্যে ভয় বিরাজ করছে। নির্বাচনে কোন অকার্যমুলক কিংবা গন্ডগোল সৃষ্টি হলে সেটি দায় ভার একে এম জাহাঙ্গীরকে নিতে হবে।
এ বিষয়ে আওয়ামীলীগে সাধারণ সম্পাদক লক্ষিপদ দাশ জানান, ভিডিও ব্যাপারে আমি শুনেছি। আমি এখন ঢাকায় আছি। এ ব্যাপারে আওয়ামীলীগ পক্ষ হতে সাদেক হোসেন চৌধুরী বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। কয়েকদিন পর আলোচনা সভায় কেন এই কথা বলে হয়েছে সেই ব্যাপারে দলীয় কার্যালয়ের জিজ্ঞেস করা হবে।
বান্দরবান নির্বাচন কমিশনার কার্যালয় কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম জানান, এখনো পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করা হবে।