মোঃ আজগর আলী খান, রাজস্থলী প্রতিনিধি, রাঙামাটিঃ
রাঙামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৩টিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ নভেম্বর। গত ১৫ অক্টোবর বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক এ তফসিল ঘোষণা করা হয়। তবে তফসিল ঘোষণার পর পরই দলীয় মনোনয়ন পেতে জেলা ও কেন্দ্রীয়ভাবে জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা। দলীয় প্রতীক নৌকার মাঝি হতে উচ্চপদস্থ নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে নৌকা প্রতীকের দলীয় মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে ওঠেছেন অনেক নেতাকর্মী। আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্যান্য দলীয় প্রার্থীদের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের লক্ষ্যে অন্য কোন দলের প্রার্থীকে মাঠে তৎপর হতে দেখা যায়নি।
রাজস্থলী উপজেলার ৩নং বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের দলীয় মনোনয়ন পেতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহনে অনেক শীর্ষ নেতা এলাকার সাধারণ ভোটারদের কাছে জানান দিচ্ছেন নিজের প্রার্থীতার আশা আকাঙ্কার কথা। এমনকি অনেক নেতাকর্মীদের নিয়ে ঘরোয়া বৈঠক ও চায়ের দোকানের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নিজেদের প্রার্থীতা বিষয়েও নানা রকম ষ্ট্যাটার্স অভিব্যক্ত করছেন বলেও জানা গেছে।
এদিকে বর্তমান চেয়ারম্যানের পাশাপাশি একঝাঁক নতুন মুখ আওয়ামী লীগের পক্ষে মনোনয়ন পেতে উচ্চ মহলের কাছে জোর লবিং চালাচ্ছেন এসব নেতারা। ২নং গাইন্দ্যা ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেতে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। অন্যদিকে ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নের দৌঁড়ে এগিয়ে রয়েছেন রবার্ট ত্রিপুরা। দলীয় মনোনয়ন বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান উবাচ মারমা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নির্ধারণে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সম্পর্কীয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সম্মানিত সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপির নির্দেশনা অনুসারে এবং সাংগঠনিক নিয়মে ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি মনোনয়ন কমিটি গঠন করা হবে। সেই কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে দলীয় বর্ধিত সভার মাধ্যমে প্রতি ইউনিয়ন থেকে ঐক্যমত অনুসারে ১-৩ জনের প্রার্থীর নামের তালিকা জেলায় প্রেরণ করা হবে। জেলা থেকে বাছাইয়ের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের আলোকে দলীয় প্রার্থী চুড়ান্ত ভাবে নির্ধারণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, দলের জন্য ত্যাগী নেতা, তৃণমূলে জনপ্রিয়তা এবং শিক্ষা-দীক্ষায় যিনি অগ্রসর থাকবেন এমন যোগ্য প্রার্থীকে দলীয় কর্তৃক মনোনয়নে অগ্রাধীকার দেওয়া হবে।
অপরদিকে উবাচ মারমা নিজের ফেসবুক আইডির ষ্ট্যাটাসে কষ্টের কন্ঠে বলেছেন, সুদীর্ঘ ২৬বছর বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাজনীতির সঙ্গে সংপৃক্ততা ছিলাম। দীর্ঘকাল অনেক হয়রানি, নির্যাতন, পুলিশের লাঠিপেটা থেকে শুরু করে সব ধরনের যন্ত্রণায় কাতর হয়ে সহ্য করে রাজনীতিতে একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে প্রমাণ করেছিলাম। কিন্তু সুদীর্ঘ ২৬ বছর পর একবুক বেদনা ও কষ্ট নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ রাজস্থলী উপজেলা শাখা থেকে নেতৃবৃন্দদের ব্যক্তি স্বার্থের কারনে এবং আওয়ামীলীগের পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে স্বেচ্ছায় দল থেকে অব্যাহতি নিয়েছি। পাশাপাশি সুদীর্ঘকাল ২৬টি বছর পার করে রাজনীতির জীবন সফলতার গল্পগুলো বলেই দলের ব্যর্থতার দায়ভার কান্দে নিয়ে আজ ২৩ অক্টোবর হতে অব্যাহতির ইতি নিলেন।
তিনি বলেন, বিগত দিনেই যেভাবে দলকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে তা আগামীতেও সেই রূপে প্রতিষ্ঠিত করতে সকল নেতাকর্মীদের একসঙ্গে কাজ করতে এবং আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সকল নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানান।