বাঘাইছড়ি প্রতিনিধি:
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে শ্রেণিকক্ষের সংকটে রয়েছে জীবতলী কে এল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
বাঘাইছড়ি উপজেলার ৩২-নং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে অবস্থিত স্কুলটিতে রবিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ঃ০০ ঘটিকায় স্ব-শরীরে উপস্থিত হলে “দৈনিক স্বদেশ বিচিত্রা” বাঘাইছড়ি প্রতিনিধি’কে উক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুবিমল চাকমা জানান, আমরা শ্রেণিকক্ষের অভাবে দুই শিফটে ক্লাস নিয়ে থাকি, সকাল ৯:০০ ঘটিকা থেকে দুপুর ১২-ঘটিকা প্রথম শিফট এবং ১২:২০ ঘটিকা থেকে বিকাল ৪:০০ঘটিকা পর্যন্ত দ্বিতীয় শিফট।
যা আমাদের শিক্ষকদের জন্য খুবই কষ্টকর ব্যাপার। তিনি আরও বলেন পুরো স্কুলটিতে মাত্র একটি অফিস কক্ষ ও দুই’টি শ্রেণী কক্ষ রয়েছে। আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো নাস্তা তৈরির জন্য যে ছোট্ট একটি কক্ষ রয়েছে তার মধ্যেও ক্লাস করাতে হচ্ছে। স্কুলটির চারপাশে নেই বাউন্ডারি ওয়াল(সীমানা প্রাচীর)। সহকারী শিক্ষকগণের জন্য নেই অফিস কক্ষ। এছাড়াও তিনি দীপংকর তালুকদার এমপি’র কাছে জোড় দাবী জানান, যাতেকরে স্কুলটির এহেন পরিস্থিতি লাঘব করে, এলাকাবাসীর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে জেনো পরিপূর্ণ একটা প্রাথমিক বিদ্যালয় রূপে গড়ে দেন।
অত্র স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা আলোড়ন চাকমা বলেন: বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্র পরিচালনায় দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে। দুঃখের বিষয় হলো আমরা পার্বত্যবাসী বরাবরের ন্যায় পিছিয়ে রয়েছি তার জলন্ত প্রমাণ হিসেবে আমাদের এই স্কুলটি – জেনো দেখার কেউ নেই। আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী’র কাছে আকুল আবেদন জানাই, খুব শীগ্রই জেনো আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে খুব শীগ্রই স্কুলটিকে একটু পরিপূর্ণ স্কুলে পরিনত করেন।
জীবতলী কে এল সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয়টি ১৯৯০ সালে স্থাপিত হলেও আজ অবধি নেই
উন্নয়নের ছোঁয়া এমনটা মন্তব্য করে আরেক সহকারী শিক্ষক পলাশ চাকমা বলেন, এই স্কুল প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ বহু বছর শিক্ষকগণ হাজাড়-দেড় হাজার টাকায় চাকরি করেছে, অনেক কষ্টে গড়া এ প্রতিষ্ঠান স্বপ্নের মুখ দেখে ২০১৩সালে যখন সরকারিকরণ করা হয়। আমার বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী যখন পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নতির জন্য প্রশংসার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন, নিশ্চয়ই আমাদের এ দুর্দশা বেশিদূর গড়াবে না।
একজন অভিভাবক বলেন: স্কুলটিতে পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ না থাকায় প্রায় মা-বাবা তাদের ছেলে/মেয়ে কে দুই তেকে আড়াই কিঃমিঃ দূরে স্কুলে ভর্তি করছে, পাহাড়ী এ পথে পায়ে হেটে আসা-যাওয়া করায় ছেলে মেয়েরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। আজ যদি স্কুলটি পরিপূর্ণ হতো তাহলে ছেলে মেয়েরা নিজ এলাকার স্কুলে পড়াশোনা করতে পারতো।
এদিকে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জয়নাল আবেদিন জানান: স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনুযায়ী আপাতত শ্রেণিকক্ষ ঠিক আছে, তবে সীমানা প্রাচীর প্রয়োজন রয়েছে। এ স্কুলটি সহ পুরো বাঘাইছড়ি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় ত্রিশটির মত স্কুল রয়েছে যা টিনের ছাউনিতে গড়া ও জীর্ণশীর্ণ পরিস্থিতিতে রয়েছে, দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়াতে দ্রুত পরিবর্তন সম্ভব নয়। তারপরেও বিষয়টি জেলা শিক্ষা অফিসে জানানো হবে।