নিউটন চাকমা:
জেলার নানিয়ারচর উপজেলার কুতুকছড়ি ভূঁইয়াদম পাড়ার ৩টি গ্রামের যাতায়াতের মাধ্যম হলো বাঁশের তৈরী করা একমাত্র এ বাঁশের সাঁকোটি। পারাপারের প্রধান ও অন্যতম ভরসা এ সাঁকোটি। একটানা প্রবল বৃষ্টিপাত বা ৩০-৪০ মিনিট টানা বৃষ্টি হলেই পাহাড়ী ঢলের পানি নেমে এসেই যাতায়াতের পুরো মাটির রাস্তাটি ডুবে গিয়ে পারাপার হতে অনেকটা ভোগান্তিতেই পোহাতে হয়। অনেক সময় পানি না কমানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় ঘন্টার পর ঘন্টা বলে এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেন।
স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, দীর্ঘ ১০/১৫ বছর ধরে ২/৩টি গ্রাম মিলেই নিজস্ব অর্থায়নের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে বাঁশের তৈরী করা সাঁকোটি দিয়ে পারাপার বা চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। এ সাঁকোটি দিয়ে পাগলা ছালা(ভূঁইয়াদম পাড়া), কাবুকছড়ি ও নারনছড়া ৩টি গ্রামের জনসাধারণ যাতায়াত করে থাকেন। তাছাড়া এ রাস্তা ছাড়া বিকল্প রাস্তা নেই। বর্ষা ও শীত মৌসূমেই সাঁকোটি নিরূপায় হয়ে ঝুঁকিতে চলাচল করতে হয়। বয়োবৃদ্ধদের জন্য চলাচলে মারাত্বকভাবে কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তারপরও এ সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বাঁশের দ্বারা তৈরীর সাঁকোটি বছরে কমপক্ষে দুই বা তিনবার মেরামতের প্রয়োজন পড়ে। সুতরাং একবার মেরামত করতে হলে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার প্রয়োজন পড়ে। যে টাকাগুলো বিগত ১৫/২০ বছরে এ সাঁকোর জন্য টাকা খরচ করা হয়েছে তাতেই এলাকাবাসীদের অর্থায়নের এ টাকা দিয়ে ভালোমানের একটি ছোটখাটো কালভার্ট তৈরী করা যেত।যেজন্য এলাকাবাসীদের কথা বিবেচনা করে একটি ছোট আকারে ব্রীজ বা কালর্ভাট নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসীরা।
স্থানীয়রা আরো অভিযোগ করে বলেন, আমরা দীর্ঘ দিন ধরে বেশ ২/৩টি অফিসে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি কিন্তু কোন লাভই হয়নি। বরং যে পরিমাণ যাওয়া-আসা খরচ লেগেছে তা সাঁকোর কিছু অংশ মেরামতের কাজে আসতো। এজন্য কোথাও যোগাযোগ করতে আর ইচ্ছে করেনা। এখন শুধু কেউ তাকিয়ে আছি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দিকে। তারা স্বহৃদয় হয়ে এগিয়ে আসেন তাহলে এলাকাবাসীদের জন্য মঙ্গল হবে।
এব্যাপারে নানিয়ারচর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগে(এলজিইডি) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ঈদের পরবর্তী হতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধিতে অন্যান্য জেলাসহ রাঙামাটিতেও কঠোর লকডাউন থাকায় অফিসে কাউকে পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্যের (নাম প্রকাশ না করার শর্তসাপেক্ষে) সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, আমরা এ সাঁকোর পরিপ্রেক্ষিতে বেশ ৪/৫বার নানিয়ারচর উপজেলাতে ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড অফিসের সাথে যোগাযোগ করেছি, তারা প্রতিবারই আশ্বাস প্রদান করেন কিন্তু কোন খবর নেননি। এথেকেই আর যোগাযোগের করা হয়নি। আমরা এলাকাবাসীরা আশাবাদী বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড নতুন চেয়ারম্যান যোগদান করেছেন। তিনি যদি একটু সু-নজরদারী রাখেন বা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ(এলজিইডি) জনসাধারণের কষ্টের কথার প্রেক্ষিতে এগিয়ে আসেন তাহলে সাঁকোটি মেরামত না করে একটি ব্রীজ বা কালর্ভাট প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অন্ততপক্ষে ৩টি গ্রামের যাতায়াতকারী এলাকাবাসী এ সুবিধা থেকে কষ্টের লাঘব হবেন বলে স্থানীয়দের দাবী।