মোঃ সিরাজুল মনির, নিজস্ব প্রতিনিধি:
ডিপো থেকে রপ্তানিমুখী কন্টেনার সময়মতো বন্দরে পৌঁছাচ্ছে না। এতে করে সিডিউল থাকা সত্বেও জাহাজে উঠানো সম্ভব হচ্ছে না কন্টেনার। আবার ডিপো থেকে কন্টেনার আসার জন্য অপেক্ষা করতে গিয়ে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় জেটিতে অলস বসে থাকতে হচ্ছে জাহাজকে। সবকিছু মিলে বেসরকারি আইসিডি থেকে রপ্তানি পণ্য বোঝাই কন্টেনার সময়মতো জেটিতে না পৌঁছার ফলে বড় সংকটে পড়তে হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরকে। গতকাল এক জরুরি পত্র দিয়ে বেসরকারি আইসিডি থেকে রপ্তানিমুখী কন্টেনার অতি দ্রুত বন্দরে পৌঁছানোর জন্য তাগাদা দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানিকৃত শতভাগ পণ্যই বেসরকারি আইসিডিগুলোতে স্টাফিং করা হয়। বেসরকারি ১৯টি আইসিডি বন্দরের সহায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কন্টেনারগুলো রপ্তানির জন্য তৈরি করে। কোন জাহাজে কোন কন্টেনারটি ট্রান্সশিপমেন্টের জন্য পোর্টে যাবে তা আগে থেকে নির্ধারিত। পৃথিবীর উন্নত বন্দরগুলোতে জাহাজের সিডিউল অনুযায়ী ওই জাহাজে কোন কোন কন্টেনার রপ্তানি হবে তা জাহাজ জেটিতে ভেড়ার অন্তত ২৪ ঘন্টা আগেই সংশ্লিষ্ট ইয়ার্ডে পৌঁছে যায়। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দরে সেই সুবিধা নেই। বিশেষ করে সিসিটি এবং এনসিটির ছয়টি বার্থে এক্সপোর্ট কন্টেনার রাখার মতো কোন জায়গাও নেই। জেনারেল বার্থের ৯ নম্বর জেটিতে অল্প সংখ্যক রপ্তানীমুখী কন্টেনার রাখার জায়গা রয়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম বন্দরে কোন জাহাজ জেটিতে ভেড়ার পর অন্তত দেড় দিন চলে যায় আমদানিকৃত পণ্য খালাস করার জন্য। আমদানি পণ্য খালাসের পর ওই জাহাজে রপ্তানি করা হবে এমন কন্টেনারগুলো সরাসরি হুক পয়েন্টে নিয়ে আসা হয়। ওখান থেকেই জাহাজে বোঝাই করা হয়। চট্টগ্রাম বন্দরে গত কিছুদিন যাবত এই হুক পয়েন্টে কন্টেনার পৌঁছানো নিয়ে মারাত্মক রকমের সংকট তৈরি হয়েছে। নির্ধারিত জাহাজের নির্ধারিত কন্টেনারগুলো সময়মতো পৌঁছছে না। এতে করে জাহাজের স্লট থাকলেও অনেক সময় ওই কন্টেনার না নিয়ে জাহাজ যাত্রা করছে। আবার অনেক সময় সংশ্লিষ্ট কন্টেনারের জন্যই জাহাজকে বাড়তি সময় বন্দরে অবস্থান করতে হচ্ছে। আবার জাহাজে কন্টেনার বোঝাইকালে অধিক ভারি কন্টেনারগুলো নিয়ে ওজনে ভারসাম্য তৈরি করা হয়। সময়মতো কন্টেনার হুক পয়েন্টে না পৌঁছায় জাহাজের কন্টেনার ম্যানেজমেন্টেও সংকট দেখা দিয়েছে। অপরদিকে সময়মতো কন্টেনার না পৌঁছানোর ফলে বেসরকারি আইসিডিগুলোতেও রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেনারের বিশাল এক জটলা তৈরি হচ্ছে। যা আইসিডিগুলোকেও সংকটে ফেলছে। সবকিছু মিলে সময়মতো কন্টেনার বন্দরের হুক পয়েন্টে না পৌঁছার ফলে চট্টগ্রাম বন্দর এবং বেসরকারি আইসিডিকে সংকট মোকাবেলা করতে হচ্ছে। দেশের রপ্তানি বাণিজ্যেও সংকট তৈরি হচ্ছে।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে রপ্তানি পণ্য বোঝাই কন্টেনাার দ্রুত জেটির হুক পয়েন্টে পাঠানোর জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের টার্মিনাল ম্যানেজারের পক্ষ থেকে সম্প্রতি ডিপো মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেনার ডিপো এসোসিয়েশন (বিকডা) কে জরুরি পত্র দেয়া হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, দেশের আমদানি রপ্তানি প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে রপ্তানি পণ্য বোঝাই কন্টেনারগুলো নির্দিষ্ট সময়ে জাহাজের হুক পয়েন্টে প্রেরণ এবং শিপমেন্ট নিশ্চিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে, পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটির সময়ে পর্যাপ্ত সংখ্যক ট্রেইলার ও জনবল নিয়োজিত রেখে রপ্তানিমুখী কন্টেনার শিপমেন্টের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোভিড -১৯ পরিস্থিতিতে বন্দরের ভেসেল অপারেশন , ইয়ার্ড অপারেশনসহ যাবতীয় অপারেশনাল কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় রপ্তানি পণ্যবাহী কন্টেইনার জাহাজ জেটি ত্যাগের ছয় ঘন্টা পূর্বে বন্দরে জাহাজের হুক পয়েন্টে পৌছানোর অনুরোধ করা হয়েছে। সপ্তাহের সাতদিনই চব্বিশ ঘন্টা কন্টেনার শিপমেন্টসহ বন্দরের কার্যক্রম সচল রাখার জন্যও বেসরকারি আইসিডিগুলোর সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
এই ব্যাপারে গতকাল বিকডার সেক্রেটারি রুহুল আমিন সিকদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ডিপোগুলোতে বিপুল পরিমান কন্টেনার আটকা পড়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, স্বাভাবিক সময়ে আমাদের ডিপোগুলোতে ৬/৭ হাজার টিইইউএস পর্যন্ত রপ্তানিমুখী কন্টেনার থাকে। আজ(গতকাল) সেখানে কন্টেনার রয়েছে ১৭ হাজার ৫৬ টিইইউএস। জাহাজের নমিনেশন না থাকায় কন্টেনারগুলো পাঠানো যাচ্ছে না বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে বন্দর বা আমাদের কিছু করার নেই। যেসব কন্টেনার জাহাজের নমিনেশন দিচ্ছে সেগুলো যথাসময়ে বন্দরের হুক পয়েন্টে পাঠিয়ে দিচ্ছি। নমিনেশন ছাড়া অন্য কোন কন্টেনার বন্দরে পাঠানোর সুযোগ আমাদের নেই। বৈশ্বিক মহামারী করোনার অভিঘাত দেশে দেশে শিপিং সেক্টরে ভয়াবহ রকমের সংকট তৈরি হয়েছে। যার ধকল আমাদেরকেও সহ্য করতে হচ্ছে বলেও রুহুল আমিন সিকদার মন্তব্য করেন।
এই ব্যাপারে গতকাল বিকডার সেক্রেটারি রুহুল আমিন সিকদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ডিপোগুলোতে বিপুল পরিমান কন্টেনার আটকা পড়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, স্বাভাবিক সময়ে আমাদের ডিপোগুলোতে ৬/৭ হাজার টিইইউএস পর্যন্ত রপ্তানিমুখী কন্টেনার থাকে। আজ(গতকাল) সেখানে কন্টেনার রয়েছে ১৭ হাজার ৫৬ টিইইউএস। জাহাজের নমিনেশন না থাকায় কন্টেনারগুলো পাঠানো যাচ্ছে না বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে বন্দর বা আমাদের কিছু করার নেই। যেসব কন্টেনার জাহাজের নমিনেশন দিচ্ছে সেগুলো যথাসময়ে বন্দরের হুক পয়েন্টে পাঠিয়ে দিচ্ছি। নমিনেশন ছাড়া অন্য কোন কন্টেনার বন্দরে পাঠানোর সুযোগ আমাদের নেই। বৈশ্বিক মহামারী করোনার অভিঘাত দেশে দেশে শিপিং সেক্টরে ভয়াবহ রকমের সংকট তৈরি হয়েছে। যার ধকল আমাদেরকেও সহ্য করতে হচ্ছে বলেও রুহুল আমিন সিকদার মন্তব্য করেন।