মো. রবিউল হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার:-
আর কয়েকদিন পরই পবিত্র ঈদুল আযহা। পশু কেনা-বেচায় ব্যস্ত সময় পার করছে মানুষ। বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতেও সারা দেশে চলছে কোরবানির পশুর হাট। এরই ধারাবাহিকতায় প্রায় শেষ মুহূর্তে এসে বেশ জমে উঠেছে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার কোরবানীর পশুরহাট গুলো। লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে বড় খামারী লাইফ ওয়েট পদ্ধতিতে এবং অনলাইনে গরু বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে ।
প্রান্তিক খামারিদের কথা মাথায় রেখে আসন্ন কোরবানি উপলক্ষে মানিকছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, তিনটহরী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ ও যোগ্যাছোলা প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে হাটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ইতি মধ্যে এইসব হাট গুলোতে বিক্রিও হয়েছে বিভিন্ন সাইজের গরু। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে বাজার ইজারাদারসহ ক্রেতা-বিক্রেতা সকলে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস ও খামার মালিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ছোট-বড় গো-খামার আছে ৩০টি। এসব খামারে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কোরবানে বাজারজাত করার উদ্দেশ্যে প্রায় পাঁচ শতাধিক দেশি-বিদেশী গরু সৃজিত সবুজ ঘাস, খড়, সাইলিজ, খৈল, ভূষিতে মোটাতাজা করা হয়েছে। এখানকার খামারে বেড়ে উঠা গরু দেখতে যেমন সুন্দর, মাংস তেমন সু-স্বাদু। ফলে সমতলের কোরবানী করা লোকজন পাহাড়ের গরু পছন্দ করে বেশি।
এছাড়া এখানকার গ্রামে-গঞ্জের হাজারো কৃষক নিজ গৃহে ২/৪টি করে অন্তত কয়েক হাজার দেশি বলদ, ষাড় লালন-পালন করছেন। গো-খামারের প্রতিটি গরু গড়ে ৭-১৪-২০ মণ ওজনের। এত বড় গরু সাধারণভাবে হাটে তোলা কষ্টকর। ফলে লাইফ ওয়েট পদ্ধতিতে গরু বিক্রি করে আসছেন বড় খামারীরা।
তুলাবিল এগ্রো ফার্মের স্বত্তাধিকারী সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. আবদুল কাদের বলেন, শখ করে গত দুই বছর যাবত ছোট পরিসরে পুঁজি বিনিয়োগ করেছিলাম। এবারও ছোট ও মাঝারী ৩০/৩৫টি দেশি ষাড় মোটাতাজা করিয়েছি। যা ইতোমধ্যে বেশির ভাগ অনলাইনে বিক্রি হয়ে গেছে। আগামী ১৭ ও ১৮ জুলাই উপজেলার মানিকছড়ি ও তিনটহরী স্কুল মাঠে সর্বশেষ হাট। এর মধ্যে তিনটহরী হাটে গত ১৪ জুলাই অন্তত সাড়ে তিনশ গরু বিক্রি হয়েছে। গড়ে ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৩০ টাকা মূল্যের গরু বেশি বেচা- কেনা হয়েছে । তবে ইজিয়াম বড় গরুর ক্রেতা ছিল না। ফলে বড় বড় এসব গরু ফেরত গেছে।
তিনটহরী বাজার ইজারাদার প্রতিনিধি মো. আবদুল আলিম বলেন, শেষ মুহূর্তে এসে কোরবানীর হাটে স্বস্তি এসেছে। করোনার এই দুঃসময়ে এর চেয়ে বেশি দাম আশা করলে ভূল হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারী খামারী অন্তত পুঁজি ফিরে পেয়েছে। আগামী রোববার তিনটহরী বাজারে কয়েক হাজার গরু উঠবে। এখানে হাসিল সহনীয়, ফলে গরুর ক্রেতা থাকে বেশি।
উপজেলা প্রাণী সম্পাদ কর্মকর্তা ডা. সুচয়ন চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, বৈশ্বিক মহামারীর এই দুঃসময়ে কোরবানীর হাট জমে উঠার খবরে বেশ ভালা লাগছে। এই উপজেলায় ৩০টি তালিকাভুক্ত ছোট-বড় খামারে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক, খাবারে ও আধুনিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। প্রতিটি খামার আমরা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করেছি। করোনার এই দুঃসময়ে বাজার কিছুটা ভালো হওয়ায় খামারীরা অন্তত ডেইরী শিল্পে উৎসাহিত হবে।