লেখক:-তারিকুল আলম
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট
নোয়াখালী
বাংলাদেশের বনাঞ্চল সুষম অর্থনীতির জন্য প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্ত অপ্রতুল হলেও এসব বনাঞ্চল দেশের অর্থনীতি ও সার্বিক কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এজন্যই জনগণের অস্তিত্ব ও টেকসই উন্নয়নের জন্য বনসম্পদ সংরক্ষণ অত্যাবশ্যক। বাছাইকৃত বৃক্ষ কর্তন ও স্বাভাবিক বংশবৃদ্ধির মাধ্যমে ১৮৭০ সালে পার্বত্য বনে সরকারি ব্যবস্থাপনার সূচনা ঘটে। পরবর্তী সময়ে ১৯৩০ সালের দিকে সম্পূর্ণ বনভূমির কর্তন এবং কৃত্রিম বংশবিস্তার বা বৃক্ষরোপণ পদ্ধতি চালু হয় এবং সেসঙ্গে বাছাইকৃত বৃক্ষ কর্তন-বনাম-উন্নয়ন পদ্ধতি অব্যাহত থাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এসব বনাঞ্চলের ওপর অত্যধিক চাপ পড়ে এবং বনজ দ্রব্যের বর্ধিত চাহিদা মেটাতে আহরণ বৃদ্ধি পায়। পরবর্তীতে দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি বনায়ন এবং সেসঙ্গে সংরক্ষণ ব্যাপকহারে চালু করা হয়।
বাংলাদেশের নিবিড় ভূমি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম হিসেবে কৃত্রিম বনায়ন ক্রমেই বাড়ছে। বর্তমানে বনায়ন প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে দেশের সামগ্রিক বৃক্ষসম্পদ বৃদ্ধি, বনজ সম্পদ হ্রাস প্রতিরোধ, চিহ্নিত সংরক্ষিত এলাকার বনভূমি সংরক্ষণ জোরদার এবং স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে বনসম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা। উপকূলীয় অঞ্চলে বনায়ন কার্যক্রম ও ‘উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী’ হিসেবে একটি গাছপালার বেষ্টনী গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা বহু পূর্বেই স্বীকৃত হয়েছে। উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পের অধীনে ব্যাপক বনায়ন কর্মসূচির বাস্তবায়ন উপকূলীয় বাস্ত্তসংস্থানের সংরক্ষণ ও উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখবে।
সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াটারএইড বাংলাদেশের একটি যৌথ গবেষণায় বলা হয়েছিল, বাংলাদেশে মোট বনভূমির পরিমাণ ২৩ লাখ হেক্টর। এক যুগে তিন পার্বত্য জেলায় বিভিন্ন ধরনের বনভূমি কমেছে ৩,৬২,০৩৬ হেক্টর। দখলদারি অব্যাহত আছে টাঙ্গাইলের মধুপুর, গাজীপুরের শালবাগানসহ বিভিন্ন সংরক্ষিত বনাঞ্চলে। পরিবেশবিদদের মতে, যেকোনো দেশে অন্তত ২৫% বনভূমি থাকা দরকার। আমাদের আছে মাত্র ১৫.৫৮%, যার মধ্যে প্রাকৃতিক বনের পরিমাণ খুবই কম, ৫% মতো। সৃজন বনের পরিমাণ বাড়লেও সংরক্ষিত বা প্রাকৃতিক বনের পরিমাণ ক্রমেই কমে যাচ্ছে।
কোন নির্দিষ্ট ভূমিভাগ থেকে বৃক্ষছেদনের মাধ্যমে অরন্যের অপসারণ ঘটিয়ে সমপরিমাণ অরণ্য পুনঃস্থাপনের প্রচেষ্টা না করাকে অরণ্যবিনাশ বা Deforestation বলে। বর্তমান পৃথিবীর ক্রমবর্ধমান জনগণের চাহিদা মেটানোর জন্য যথেচ্ছভাবে অরণ্য সম্পদ আহরণের ফলেই প্রধানত অরন্যের বিনাশ ঘটছে। এছাড়া দাবানল, কীট পতঙ্গের আক্রমণ, ভূমিধস, অগ্ন্যুৎপাত ইত্যাদি প্রাকৃতিক কারণেও অরণ্যের বিনাশ ঘটে। নিম্নে অরণ্যবিনাশের কারণগুলি আলোচনা করা হলো-
A) প্রাকৃতিক কারণ-
১)দাবানল-বজ্রপাতের কারণে কিংবা গাছে গাছে ঘর্ষণের কারণে বনভূমিতে আগুন লেগে দাবানল সৃষ্টি হয়। এই দাবানলের ফলে বিস্তীর্ণ অরণ্য অঞ্চল ধ্বংস হয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া ইত্যাদি দেশের বিস্তীর্ণ অরণ্য অঞ্চল এইভাবে দাবানলের ফলে ধ্বংস হয়ে গেছে।
২)ঝড়ঝঞ্ঝা-সাইক্লোন, টর্নেডো প্রভৃতি প্রবল ঝড় ঝঞ্ঝার প্রকোপে অরন্যের বিশেষত উপকূলবর্তী অরন্যের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ফলে অরন্যের বিনাশ ঘটে। যেমন-১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দের সুপার সাইক্লোনে উড়িষ্যার নন্দনকাননের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।
৩)ভূমিধ্বস-পার্বত্য অঞ্চলে অত্যধিক বৃষ্টিপাতের ফলে অথবা অন্য কোনো কারণে যখন দূর্বল শিলাসমূহ মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে ভূমির ঢাল বরাবর দ্রুত গতিতে নিচের দিকে পতিত হয়, তখন তাকে ভূমিধব্স বলে। এই ভূমিধ্বসের ফলে পার্বত্য অঞ্চলের অরণ্য বিনষ্ট হয়। হিমালয় ও আল্পস পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিধ্বসের কারণে সরলবর্গীয় বনভূমির প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
৪)অগ্ন্যুৎপাত-আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ভূগর্ভ থেকে নির্গত উত্তপ্ত গলিত লাভা মাইলের পর মাইল অঞ্চল জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা অরণ্য অঞ্চল ধ্বংস করে। ফিলিপাইন, মেক্সিকো ইত্যাদি দেশের বহু অরণ্য অগ্ন্যুৎপাতের ফলে নষ্ট হয়ে গেছে।
৫)রোগ পোকার আক্রমণ-অরণ্যবিনাশেরর একটি অন্যতম প্রাকৃতিক কারণ হলো রোগ পোকার আক্রমণ। বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকারক পতঙ্গ তথা পঙ্গপাল, মাজরা পোকা, পামরি পোকা, ঘাসফড়িং ইত্যাদি দ্বারা অরণ্য আক্রান্ত হয়। এর ফলে অরণ্যের যথেষ্ট ক্ষতি হয়।
B)মানবীয় কারণ-
১) কাষ্ঠ আহরণ-অরণ্যের কাঠ হলো একটি মূল্যবান ও বহুল ব্যবহৃত কাঁচামাল, যা মানুষের বহুবিধ প্রয়োজন মিটিয়ে থাকে। তাই সভ্যতার জন্মলগ্ন থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত কাঠের চাহিদা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। জ্বালানি, গৃহ নির্মাণ, আসবাবপত্র নির্মাণ, রেলের স্লিপার নির্মাণ, খেলাধুলার সরঞ্জাম নির্মাণ, জাহাজ ও নৌকা নির্মাণ ইত্যাদি কাজে কাঠের সীমাহীন চাহিদা পূরণের জন্য বনভূমি ধ্বংস করা হচ্ছে অর্থাৎ অরণ্যচ্ছেদনের পরিমাণ ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২) পশুপালন-অরন্যের সহণ ক্ষমতা অপেক্ষা অধিক পরিমাণে পশুচারণ অরণ্যবিনাশ এর অপর একটি মুখ্য কারণ। যেমন উত্তরাখণ্ড রাজ্যের আল্পীয় অঞ্চলে প্রায় ১২ লক্ষ ও ছাগল রয়েছে। এখানকার গুর্জর উপজাতি ভুক্ত পশুপালন প্রায় ৫০০০-৭০০০ মহিষ পালন করে। এভাবে অনিয়ন্ত্রিত হারে পশুচারণের কারন সেখানে ১৯৮১ সালে যেখানে অরন্যের পরিমাণ ছিল ১৩.৭৯ ঘনমিটার, ২০০১ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২.৬৬ ঘনমিটার।
৩) কৃষিকাজ-ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে খাদ্যশস্য সহ অন্যান্য চাহিদা পূরণের জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অরণ্যচ্ছেদনের মাধ্যমে কৃষি জমি তৈরি করা হয়। আবার ভারতসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশে বনভূমি কেটে ও পুড়িয়ে স্থানান্তর কৃষি পদ্ধতিতে কৃষিকাজ করা হয়। ফলে অরণ্য বা বনভূমি বিনষ্ট হয়।
৪) সড়ক নির্মাণ-সড়ক নির্মাণের কারণে অরণ্য বিনাশের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। পার্বত্য অঞ্চলে পাহাড় ফাটিয়ে সড়ক নির্মাণ করতে হয় বলে সামান্য দূরত্ব যুক্ত সড়ক পথকে যুক্ত করতে অধিক সড়ক নির্মাণ করতে হয়।এই কারণে অধিক পরিমাণ অরণ্য বিনাশ করতে হয়। তবে সমভূমি অঞ্চলে সড়কপথ নির্মাণের ক্ষেত্রে অরণ্যবিনাশের পরিমাণ অপেক্ষাকৃত কম হয়।
৫) বহুমুখী নদী পরিকল্পনা-বহুমুখী নদী পরিকল্পনায় প্রচুর পরিমাণে জল ধরে রাখার জন্য নদীতে বাঁধ দিয়ে সেই বাঁধের পশ্চাতে জলাধার নির্মাণ করা হয়।এই জলাধার নির্মাণের জন্য বিস্তীর্ণ অঞ্চলের প্রাকৃতিক অরণ্য বিনষ্ট হয়।
৬) নগরায়ণ ও শিল্পায়ন-ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার বস্তির চাহিদা পূরণ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির যোগান অব্যাহত রাখার জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অরণ্যচ্ছেদনের মাধ্যমে ভূমি সংস্থানের দ্বারা নগরায়ণ ও শিল্পায়নের বাস্তব রুপায়ণ সম্ভব হয়েছে। ফলস্বরূপ অরণ্যের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে।
৭) অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বৃক্ষচ্ছেদন-মানুষ নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নির্বিচারে পরিণত ও অপরিনত বৃক্ষ ধ্বংস করে চলেছে। এর ফলে বনভূমির পরিমাণ ক্রমশঃ হ্রাস পাচ্ছে।
৮) খনিজ সম্পদ উত্তোলন-খনি থেকে খনিজ সম্পদ উত্তোলনের সময় খনির পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বনভূমি বিনষ্ট হয়। এর ফলেও অরন্যের পরিমাণ হ্রাস পায়।
দখলকৃত বনভূমির পরিমান:- বাংলাদেশে মোট বনভূমির পরিমাণ ৫৬,৪৬,৭০০ একর (২৩ লাখ হেক্টর)। বনের জমি দখল করে ঘর-বাড়ি নির্মাণ, কৃষিকাজ থেকে শুরু করে শিল্পকারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করা হয়েছে। দেশের মোট ৩,৩১,৯০৭.৫২ একর সংরক্ষিত বনভূমির মধ্যে ১,৩৮,৬১৩.০৬ একরই জবর দখল করে রাখা হয়েছে। মোট ৮৮,২১৫ জন দখলকারী দীর্ঘদিন ধরে বিপুল পরিমাণ এই বনভূমির সম্পত্তি দখলে রেখেছেন। বন বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংরক্ষিত বন দখল করে স্থায়ী স্থাপনাসহ শিল্পপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা করেছেন ১৭২ জন দখলকারী। তাঁদের দখলে আছে ৮২০.৩৪ একর সংরক্ষিত বন। ৫,৯৮২ জন দখলকারী ১৪,১৪৯.১৭ একর সংরক্ষিত বনভূমি জবরদখল করে হাট-বাজার, দোকান, রিসোর্ট/কটেজ, কৃষি ফার্ম ও শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন। এছাড়া ৮২,০৯৩ জন ব্যক্তি ১,২৩,৬৪৩.৫৫ একর সংরক্ষিত বনভূমি অবৈধ দখল করে ঘরবাড়ি, কৃষি জমি তৈরি করেছেন।
বনভূমি জবরদখলের কারণ :- সিএস রেকর্ডমূলে রেকর্ডভুক্ত বনভূমি পরে এসএ/আরএস/বিএস জরিপে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে রেকর্ড হয়েছে। এ ছাড়া ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত বনভূমি (সংরক্ষিত বনভূমি ছাড়া অন্যান্য, যেমন- রক্ষিত, অর্পিত বনভূমি) জেলা প্রশাসন কর্তৃক অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বন্দোবস্ত দিয়েছে। স্থানীয় জনগণ ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বনভূমি দখল করে কৃষিকাজ, স্থায়ী স্থাপনা, বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, হাটবাজার, স্কুল, প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। অনেক জবরদখল করা বনভূমিতে শিল্প-কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। শিল্পপতি ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বনভূমি জবরদখলের ক্ষেত্রে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করতে গেলে নিম্ন আদালতে মামলা ও আপিল এবং উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করে স্থিতাবস্থা বা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে থাকে।
বন সংরক্ষণে দেশে কঠোর আইন আছে। বেদখল হওয়া বনের জমি উদ্ধারে বন ও ভূমি মন্ত্রণালয় ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ হিসেবে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। কেবল ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করলেই হবে না, দখল হয়ে যাওয়া বনভূমি উদ্ধারে সকলের সক্রিয়তা থাকতে হবে। ব্যক্তি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দখলে চলে যাওয়া বনভূমি উদ্ধার করা অপেক্ষাকৃত সহজ।
কিন্তু যেসব বনভূমি বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের দখলে চলে গেছে, সেগুলো উদ্ধার করতে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে, বনভূমির মালিক জনগণ। সরকারের দায়িত্ব সেই বনভূমি রক্ষা করা। আমাদের উন্নয়ন পরিকল্পনায় বনভূমি সংরক্ষণ অগ্রাধিকারে থাকতে হবে। ইতোমধ্যে অবৈধভাবে দখল করে নেওয়া সংরক্ষিত বনভূমি উদ্ধারে ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম’(সর্বাত্মক অভিযান) শুরু করার যে উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার । পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারী ও মার্চের মধ্যে ১,৩৮,৬১৩.০৬ একর বনভূমি পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পরিবেশবিদগণ মনে করেন, যাহা অত্যন্ত আশা ব্যঞ্জক।
রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ী শিবির নির্মাণ করতে অসংখ্য বন ও গাছপালা কেটে ফেলা হয়েছে। তাছাড়া অর্থনৈতিক অঞ্চল, বিভিন্ন সরকারি অবকাঠামো নির্মাণে বনভূমি হ্রাস পাচ্ছে। বনভূমি দখলদাররা বিভিন্ন ভাবে রাষ্ট্র থেকে সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকে। এদের আরেকটি পরিচয়ও জনগণের কাছে স্পষ্ট করতে হবে। অবৈধ দখলদার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা জনসমক্ষে প্রকাশ করা প্রয়োজন। অবৈধ দখলদাররা স্থানীয়ভাবে ক্ষমতাবান, হয়তো রাজনৈতিকভাবেও প্রভাবশালী। কিন্তু কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রের চেয়ে তারা শক্তিশালী নয়।
রাষ্ট্রের জমি দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর না হলে এসব জমি দখলমুক্ত করা সম্ভব নয়। দেশকে বর্তমান জনগোষ্ঠীর ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাস উপযোগী টেকসই পরিবেশ নিশ্চিতকরণে বনভূমি সংরক্ষণের বিকল্প নেই। টেকসই পরিবেশ ও বন উন্নয়নে প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করতে হবে। পরিবেশকে বাসযোগ্য করতে নির্মল বায়ু, জীববৈচিত্র্য, জীব নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। বিলম্বে হলেও বেদখল হওয়া বনভূমির একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা ইতোমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। দখলদারেরা এতটাই প্রভাবশালী যে এসব মামলা বছরের পর বছর নিষ্পত্তি হয় না, সে বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।। পরিশেষে, সোনার বাংলা বির্নিমানের ক্ষেত্রে দখল হয়ে যাওয়া বনভূমি উদ্ধার করতে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ ও টেকসই পরিকল্পনা।
তথ্যসূত্র:
(i) www.bforest.portal.gov.bd
(ii) www.wikipedia.org
(iii) www.moef.gov.bd