মোঃ সিরাজুল মনির, চট্টগ্রাম ব্যুরো:
চট্টগ্রামের নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেছেন মানুষের জীবন ও জীবিকার সাথে জড়িত সবগুলি অধিকারই ভোক্তা অধিকারের আওতাভুক্ত। আর যারা যে কোন পণ্য বা সেবা ভোগ করছেন তারাই ভোক্তা। সেকারনে দেশের ১৭ কোটি মানুষই কোন না কোন ভাবে পন্য বা সেবার ভোক্তা। তাই দেশের ভোক্তাদের জাতীয় প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)কে নিত্যপণ্যে কৃত্রিম সংকট, মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্যে ভেজালের বিষয়গুলির পাশাপাশি স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ইন্টারনেট, টেলিকম, গণপরিবহন, আর্থিক লেনদেন, তথ্যের অবাধ প্রবাহ, কর্মসংস্থানসহ অন্যান্য নাগরিক অধিকার নিয়ে সোচ্চার হতে হবে। ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ইং বিকালে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ক্যাব চট্টগ্রামের সাথে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরীর সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন। অন্যান্যদের মধ্যে ক্যাব মহানগর সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব বিভাগীয় সহ-সভাপতি এম নাসিরুল হক, ক্যাব দক্ষিন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব মহানগরের সহ-সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর আবিদা আজাদ, যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস, ক্যাব চান্দগাও থানার সভাপতি মোহাম্মদ জানে আলম, ক্যাব সদরঘাট থানা সভাপতি শাহীন চৌধুরী, ক্যাব পাঁচলাইশ থানা সাধারণ সম্পাদক মোঃ সেলিম জাহ্ঙ্গাীর, ক্যাব আকবর শাহ থানা সভাপতি ডাঃ মাসবাহ উদ্দীন তুহিন, ক্যাব খুলসী থানা সভাপতি প্রকৌশলী শেখ হাফিজুর রহমান, ক্যাব হালিশহর থানার সভাপতি এমদাদুল হক সৈকত, ক্যাব বন্দর-পতেঙ্গা’র মোহাম্মদ আলী, আলমগীর বাদসা, ক্যাব জামাল খানের সভাপতি সালাহ উদ্দীন, সাধারন সম্পাদক নবুয়াত আরা সিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল চৌধুরী, ক্যাব পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের সভাপতি অধ্যাপক এবিএম হুমায়ুন কবির, ক্যাব পূর্ব ষোলশহরের সভাপতি অধ্যক্ষ মনিরুজ্জমান, ক্যাব রাউজানের মোজাফ্ফর সিকদার, মুক্তিযোদ্ধা ও পরিবেশবিদ ডঃ ইদ্রিস আলী, জেলা পরিষদ সদস্য রেহেনা চৌধুরী, রাউজান উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাউজিয়া খান, চন্দনাইশ উপজেলা সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান খালেদা আকতার চৌধুরী, ক্যাব নেতা ফয়সল আবদুল্লাহ আদনান, নুর মোহাম্মদ চেয়ারম্যান, হারুন গফুর ভুইয়া, ঝর্ণা বড়ুয়া, সোমাইয়া সালাম, নাসিমা আলম, ফারহানা জসিম, রুবি খান, চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ফেলো ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ নাজমুস সাকিব, থানা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ জাকিয়া আকতারসহ বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের ক্যাব প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান আরও বলেন প্রতিটি মানুষ খাটি মুসলিম, হিন্দু ও বৌদ্ধ হতে চান। সেজন্য ধর্মীয় আচার আচরণ ও অনুশাসন পালনেও প্রতিযোগিতায় নামেন। আবার কিছু ব্যক্তি নিত্যপণ্যের কৃিত্রম সংকট, খাদ্যে ভেজালে জড়িত হন। অথচ এই খাদ্য ভেজালের কারনে আগামি প্রজন্ম পুরোটাই মেধাশুণ্য ও অসুস্থ হবে। তাই অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট নয়, প্রয়োজন তাদেরকে সামাজিক ভাবে বয়কট ও প্রতিরোধ। করপোরেট সেক্টরে সত্যিকারের সুশাসন প্রতিষ্ঠা না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের এ ধরনের নৈরাজ্য বন্ধ হচ্ছে না। আর সেক্ষেত্রে ভোক্তা সংগঠন হিসাবে ক্যাবকে আরও শক্তিশালী ও সক্ষমতা বাড়ানো গেলে ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের মাঝে সমন্বয় জোরদার হবে। সরকারি-বেসরকারী সব সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে মানসম্মত, গুনগত সেবা ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে ভোক্তাদের আরও বেশী শিক্ষা ও সচেতনতা বাড়ানো দরকার।
ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন ক্যাব প্রতিনিয়তই ভোক্তাদের ভোগান্তি ও সমস্যাগুলি সরকারি সংস্লিষ্ঠ দপ্তর ও প্রশাসনের দৃষ্ঠি আকর্ষন করেন। সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাঠ পর্যায়ের সেবা প্রদানে ত্রুটি-বিচ্যুতি, অসংগতি, দুর্বলতা ও অস্বচ্ছতা এবং ভোক্তাদের অধিকার ভোগের প্রতিবন্ধকতাগুলি তুলে ধরি। ত্রুটিগুলি সরকারের যে দপ্তরের বিরুদ্ধে যায় তখনই তাঁরা বিষয়গুলিকে ভূল ব্যাখ্যা করে অধিকার নিশ্চিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্ঠি করেন। তিনি আরও বলেন ক্যাব মনে করে জেলা প্রশাসনের সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। জেলায় সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে স্থানীয় সমস্যা সমাধান ও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে বিষয়টি উপস্থাপনের জন্য সফল নেতৃত্ব প্রদান করে আসছে। চট্টগ্রামে ভোক্তা অধিকার সুরক্ষিত করতে সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরের মাঠ পর্যায়ে সেবা নিশ্চিতে জেলা প্রশাসন সফল সমন্বয় ও নেতৃত্ব প্রদান করবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন।