রেলের প্রকৌশল সূত্র জানায়, নতুন নকশায় সেতু নির্মাণের ব্যয় বেড়ে যাবে প্রায় ৪ গুণ বেশি। সবমিলিয়ে নতুন সেতু নির্মাণ ব্যয় দাঁড়াতে পারে পাঁচ থেকে ছয় হাজার কোটি টাকা। তাই বর্ধিত ব্যয়ের অর্থায়ন কিভাবে হবে তা জানতে চেয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছিল কোরিয়ান দাতা সংস্থাটি। এ চিঠির জবাবে বলা হয়েছিল, বর্ধিত টাকার অর্ধেক (প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা) সরকার এবং অবশিষ্ট অর্ধেক (দেড় হাজার কোটি টাকা) দিবে কোরিয়ান সংস্থাটি। ভূমি অধিগ্রহণ থেকে নকশা নির্মাণ, সবমিলিয়ে এটি বাস্তবায়নে আরও একটু পিছিয়ে যেতে হবে।
অর্থায়ন জটিলতা কাটার বিষয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. সুবক্তগীন বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নে যখন নকশা ও বাজেট তৈরি হয়ে গেছে তখনই সেতুর উচ্চতা নিয়ে আসে আপত্তি। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুন সেতুর উচ্চতা (৭.৬ মিটার) নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ আপত্তি না জানালেও ২০১৮ সালের নতুন নীতিমালা হওয়ায় ১২.২ মিটার উঁচুতে সেতু নির্মাণের অনুরোধ জানায়। আর এ আপত্তিতেই থেমে যায় সেতুর নির্মাণকাজ। কারণ, নতুন নকশা তৈরিতে যেমন সময়ের প্রয়োজন, তেমনি বাড়বে নির্মাণ ব্যয়। যদিও পূর্বে সেতু নির্মাণে এক হাজার কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে বলে জানিয়েছিল কোরিয়ান সংস্থা ইউসিএফ।
বাড়তি খরচের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোন সিদ্ধান্ত না হলেও এখন জটিলতা কেটেছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে এক হাজার কোটি টাকার পরও নতুন নকশায় বর্ধিত বাজেটের অর্ধেক প্রদান করবে কোরিয়ান সংস্থা ইউসিএফ। বাকি অর্ধেকের ভার বহন করবে বাংলাদেশ সরকার। শীঘ্রই রেলমন্ত্রী মহোদয় চট্টগ্রামে আসছেন। সেতুর বিষয়টি নিয়ে তিনি তখন বিস্তারিত জানাবেন।
রেলমন্ত্রীর চট্টগ্রাম সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করে রেলের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম আসছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। এয়ারপোর্ট থেকে নেমে গাড়ি বহর নিয়ে পটিয়ায় যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। যাওয়ার পথে কালুরঘাট সেতু পরিদর্শন করবেন মন্ত্রী। পরে পটিয়ায় গিয়ে একটি নতুন ডেমু ট্রেনের উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী।
বিশ্ববিদ্যালয় ও পটিয়ায় চালু হচ্ছে নতুন ট্রেন:
উদ্বোধন হতে যাওয়া ডেমু ট্রেন সম্পর্কে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা স্নেহাশীষ দাশ গুপ্ত বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে পটিয়া রুটে নতুন একটি ডেমু ট্রেন চালু করা হচ্ছে। ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ভোর সাড়ে ৫টায় পটিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। পটিয়ায় পৌঁছাবে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে।
এরপর সকাল সাড়ে ৭টায় পটিয়া ছেড়ে সকাল ৯টা ৫ মিনিটে চট্টগ্রাম স্টেশনে পৌঁছাবে ট্রেনটি। দ্বিতীয় ট্রিপে বিকেল ৫টায় চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে ট্রেনটি। সেখানে সন্ধ্যায় সাড়ে ৭টায় পৌঁছে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে ৭টা ৪০ মিনিটে। চট্টগ্রামে এসে পৌঁছাবে রাত ১০ টা ৪০ মিনিটে। রেলমন্ত্রী চট্টগ্রামে এসে পটিয়া থেকে এ ট্রেনটির উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
এছাড়া এ পরিবহন কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববদ্যালয় পর্যন্ত নতুন একটি ডেমু ট্রেন চালুরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরইমধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে ট্রেনটির যাত্রার সময়সূচি। ট্রেনটি বিকেল ৪ টা ৪৫ মিনিটে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে যাত্রা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাবে বিকেল ৫ টা ৪৫ মিনিটে। সন্ধ্যায় ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিরতি যাত্রা শুরু করে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ।
তবে চট্টগ্রাম সফরে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ হতে যাওয়া ডেমু ট্রেনটির উদ্বোধন মন্ত্রী করবেন কিনা তা মন্ত্রীর সফরসূচি নির্ধারণ না হওয়ায় জানাতে পারেননি তিনি।