স্টাফ রিপোর্টার, খাগড়াছড়ি:- খাগড়াছড়ি জেলা শহরের পৌর বাস-টার্মিনালের একটি আবাসিক হোটেল থেকে চাকমা তরুণীসহ এক ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে চেংগী গেস্ট হাউস এর ১২৭ নম্বর কক্ষ থেকে তাদের আটক করা হয়। এসময় পাশের কক্ষে থাকা অপর দুই যুবক পালিয়ে গেছে। তবে আটক উভয়ের পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে মুচলেকা নিয়ে শুক্রবার দুপুরের পর তাদের ছেড়েও দিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়- গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাদের আটক করেন খাগড়াছড়ি সদর থানার উপ-পরিদর্শক জামাল হোসেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আটক সোহেল রানা মাটিরাঙা উপজেলার গোমতী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শহিদুল ইসলামের ছেলে। সে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত এবং গোমতী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের চলমান কাউন্সিলের সভাপতি প্রার্থী।
পুলিশ আরও জানায়, আটককৃতরা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওই হোটেলে রাত্রিযাপন করছিলো।
এদিকে হোটেলের রেজিস্টার ঘেঁটে দেখা গেছে হোটেলে ওঠার সময় রেজিস্টারে সোহেল রানা নিজের নাম ঠিকানা ঠিক লিখলেও চাকমা ওই তরুণীকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ‘আঁখি আক্তার’ নামে লিপিবদ্ধ করেছিলেন। এছাড়া সোহেলের দুই বন্ধু পাশের ১২৬ নম্বর কক্ষে রাত্রিযাপন করছিলো বলে জানিয়েছে আবাসিক হোটেলটির পরিচালক মো. কামাল উদ্দিন।
অভিযোগ রয়েছে এই হোটেলে প্রায়শই এমন অসামাজিক কার্যকলাপ চলে। আর এতে হোটেল ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিতদেরই সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। গতকাল রাতে চাকমা ওই তরুণীকে বোরকা পড়িয়ে ‘আঁখি আক্তার’ পরিচয় দিয়ে হোটেলটিতে তুলেছিলো সোহেল রানা ও তার দুই বন্ধু। এসময় তাদের কারোরই ছবি তোলেননি হোটেল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেখেনওনি, রাখেনওনি তারা।
আবাসিক হোটেলটির পরিচালক কামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমাকে পরিচয় দেয়া হয়েছিলো ওই তরুণী সোহেলের স্ত্রী। তাই ছবিও তুলিনি, যাচাই-বাছাইও করিনি।’
এ প্রসঙ্গে খাগড়াছড়ি আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি ও পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া বলেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই-বাছাই এবং বোর্ডারদের ছবি তোলার নির্দেশনা রয়েছে। যদি তারা এটি না করে থাকে তবে এ বিষয়ে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ রশিদ। তিনি জানান, শুক্রবার দুপুরের পর সোহেল রানার বাবা শহিদুল ইসলাম এবং আটক তরুণীর বড় ভাই মুচলেকা দিয়ে থানা থেকে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে।