বান্দরবানের রুমায় সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান হত্যার প্রতিবাদে রাঙ্গামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল, মনববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের নেতারা।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় রাঙ্গামাটি সদরে সংগঠনটির নেতৃত্বে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় জেএসএস মূল দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সন্তু লারমাকে আইনের আওতায় এনে বিচারে করাসহ জেলা পরিষদ আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাচনের দাবী করেন বিক্ষোভকারীরা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘সন্তু লারমার গাড়ি থেকে জাতীয় পতাকা নামিয়ে তাকে বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং জেলা পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাচনের দাবী এবং পার্বত্য এলাকায় সেনা ও পুলিশ ক্যাম্প পুনঃস্থাপনসহ সেখানে চিরদিনের জন্য শান্তি ফিরিয়ে আনার দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা। এসময় রাঙ্গামাটিতে সন্তু লারমাকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করা হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মোঃ মজিবর রহমানের নেতৃত্বে শহরের বনরূপা পেট্রোল পাম্পের সামনে এই প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল,প্রতিবাদ সমাবেশে রাঙ্গামাটিসহ বিভিন্ন উপজেলার থেকে আসা ৫ শতাধিক মানুষ অংশগ্রহন করেন।
এসময় ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিভিন্ন শ্রেনীপেশার জনসাধারণ অংশ নেন এবং পার্বত্য আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আস্তানায় অভিযানসহ সেনাক্যাম্প পূর্ণ স্থাপনের দাবী জানান।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, সন্তুু লারমার জেএসএসসহ আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা দিনদিন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বৃদ্ধির কারণে সাধারণ জনগণ আজ অতিষ্ট। আর সেনাবাহিনীর ওপর হামলায় সার্বভৌমত্বই হুমকির মুখে। দিন দিন সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো অত্যাধুনিক ভারী অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সক্রিয় হচ্ছে। তাই পাহাড়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের ধরতে কঠিন ভূমিকা নিতে হবে সরকারকে। তাই ৭১ সালের মতো আরেকটা মুক্তিযুদ্ধ করে বৈষম্য দূর করে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলে হুশিয়ারী দেন বক্তারা।
বক্তারা এসময় অবিলম্বে পার্বত্য এলাকায় সন্ত্রাসীদের আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করা এবং সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাকে যারা হত্যা করেছে তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানান।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির, রাঙ্গামাটি জেলা পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সহ সভাপতি নাদিরুজ্জমান, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সোলায়মান, কাজি জালোয়াসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য গত ২ ফেব্রুয়ারি বান্দরবানের রুমা উপজেলার বথি ত্রিপুরা পাড়ায় সেনাবাহিনীর একটি টহল দলের ওপর জেএসএস (মূল দল)-এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা গুলিবর্ষণ করে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান নিহত ও একজন আহত হন। এ সময় আত্মরক্ষার্থে সেনাবাহিনী পাল্টা গুলি চালালে তিন সন্ত্রাসী নিহত হয়। সেনাবাহিনীর দাবি, নিহত সন্ত্রাসীরা জেএসএস মূল দলের সদস্য।