মো. রবিউল হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার:- ২০১৮ সালের ১৩ই মে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেছে তামান্না মাহমুদ। ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর দক্ষতার সঙ্গে তা পালনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন। সম্প্রতি পদোন্নতি পেয়ে বিদায় নেন তিনি। বিদায় বেলায় সাধারণ মানুষ, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতাকর্মী, সাংবাদিক ও অফিসের বিভিন্ন সহকর্মীসহ সকলেই তার আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তবুও চোখে পানি আর মুখে স্নিগ্ধ হাসি দিয়ে সহকর্মী ও উপজেলার সকলের কাছ থেকে বিদায় নিলেন ইউএনও তামান্না মাহমুদ। বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) শেষ কর্মদিবস শেষে মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)’র সরকারি বাসভবন থেকে বিদায় বেলায় দেখা গেলো এমন হৃদয় বিদারক চিত্র।
বিদায় কালে ইউএনও তামান্না মাহমুদ বলেন, ভালো থাকুক মানিকছড়ি উপজেলার প্রতিটি মানুষ। আমার কর্মজীবনে সেরা সঞ্চয় পেয়েছি আপনাদের ভালোবাসা। সরকারি চাকুরিজীবী হিসেবে পদোন্নতি ও বদলিজনিত কারণে কোনো জেলায় বা উপজেলায় স্থায়ী হওয়ার সুযোগ নেই প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের।
তিনি আরও বলেন, উপজেলায় কর্মরত অবস্থায় সহকর্মী, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের অনেক রকমের সহযোগিতা আমি পেয়েছি। কাজ আদায় করার জন্য হয়তো কারো বিরাগভাজন হয়েছি। অনেক সময় ইতিবাচক আবার কখনো নেতিবাচক ভাবে মানুষকে উপস্থাপন করা হয়। খোলা চোখ দিয়ে সবকিছু দেখা যায় না। চোখের আড়ালেও অনেক কিছু থাকে। তবে নিজের অজান্তেও যদি কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকি, কারো প্রতি অন্যায় করে থাকি তাহলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
জানা যায়, ৩০তম বিসিএস ক্যাডারের এ কর্মকর্তা দেশের বিভিন্ন উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও পরে নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে মাঠ প্রশাসনে দায়িত্ব পালন করেন। সম্প্রতি তিনি পদোন্নতি পেয়ে সহকারী জেলা প্রশাসক (এনডিসি) হিসেবে নোয়াখালীতে বদলি হন।
মানিকছড়ি প্রেসক্লাব ও উপজেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান বলেন, ইউএনও তামান্না মাহমুদ একজন দক্ষ ও মানবিক প্রশাসক ছিলেন, বৈশ্বিক মহামারিতেও তিনি সম্মূখসারিতে থেকে কাজ করেছেন। সকলকে নিজের আপন মানুষ ভেবে কাজ করেছেনে এবং সেটা সবার চোখেও পড়েছে। দীর্ঘ ৩ বছর ৮ মাস সময়ে কেবল প্রশংসিত হয়েছেন তা নয়, কখনও মানবিক কাজের ক্ষেত্রে হয়েছেন আলোচিতও তিনি। তবুও মানবতার ক্ষেত্রে চুল পরিমাণ ঘাটতি রাখেননি এই ইউএনও। তাই তার কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এই উপজেলার মানুষ তাকে মনে রাখবে।
গত ১৫ দিন উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে বিদায় সংবর্ধনা জানান তাকে।