মংহাইথুই মারমা, রুমা(বান্দরবান) প্রতিনিধি:
বান্দরবানে রুমা উপজেলার জীপ সমবায় সমিতি এখন বিলুপ্তির পথে। অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে পরার কারণে ড্রাইভার ও হেলপারদের বেতন ভাতা দিতে পারছেন না জীপ সমবায় সমিতি। এতে ড্রাইভার ও হেলপারদের পরিবারগুলো অসহায় হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে রুমার জনসাধারণ মানুষেরা।
গত বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এক বৈঠকে জীপ সমবায় সমিতির আহবায়ক সুধীর দাশ সংবাদকর্মীদের একথা বলেন।
সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০১২সালে ২৬শে ফেব্রুয়ারী জীপ গাড়ি সমবায় সমিতি রেজিষ্ট্রেশন হয়। যা রেজিঃ নং- ৪১৯। তারপর থেকে ড্রাইভার ও হেলপারদের বেতন পরিচালনা করতেন জীপ সমবায় সমিতি, যা চলমান রয়েছে ২০১৮সাল পর্যন্ত। পরে করোনা প্রকোপ’র পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে গিয়ে তাদের নিয়মকানুন বিচলিত হয়ে পরে। এরপর ২০১৯সাল থেকে বান্দরবান থেকে জীপ গাড়িগুলো সরাসরি পর্যটন এলাকা ও বিভিন্ন দূর্গম এলাকায় ঢুকে পরার কারনে রুমা জীপ গাড়িগুলো অচল হয়ে পড়ে। তাতে ক্ষয়ক্ষতি ও সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দুর্গম জনসাধারণ মানুষেরা। ২০২০ সালে এসে এ সমস্যাগুলো সমাধানের লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন, রুমা জোন ও সদর ইউনিয়নের কাছে একটি লিখিত আবেদন করেছিলেন জীপ সমবায় সমিতি। এ আবেদনটি দেখে তারা এই সমস্যা সমাধানের জন্য আশ্বাসও দিয়েছিলেন,কিন্তু এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। কিন্তু এ সমিতির সংশ্লিষ্ট সকলে খুব শীঘ্রই বাস্তবায়ন হওয়ার আশাবাদী।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, বিগত(২০১২-২০১৮) বছর গুলোতে বান্দরবান থেকে পর্যটকরা আসলেও রুমা বাজারে এসে বিশ্রাম ও বেচাকেনা করে রুমা লাইন গাড়ি দিয়ে বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় ঘুরে বেড়াতো। এতে আমাদের অনেক ব্যবসায়ীদের লাভবান হতো। তারই পাশাপাশি পারিবারিকভাবে কিছুটা স্বচ্ছলতা ছিল। কিন্তু এখন জীপ গাড়ি গুলো বান্দরবান থেকে সরাসরি বগালেক,কেউক্রাডং,রিজুক ঝর্ণা, চিংড়ি ঝর্ণা ও ডাবল ঝর্ণাসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকাগুলোতে যাওয়ার কারনে বাজারে দোকানপাটগুলোতে কম বেচাকেনা হয়ে পড়েছে।
দুর্গম এলাকার বিভিন্ন পাড়ার কারবারিরা জানান, বর্তমান সময়ে জীপ গাড়ির সমিতি না থাকার ফলে রোগী ও কৃষি পণ্য রপ্তানি ক্ষেত্রে অসুবিধা হয়ে পড়েছে। যদি এ সমিতি বাস্তবায়ন হতো তাহলে আমাদের বিভিন্ন দিক দিয়ে সুযোগ-সুবিধা থাকত।
জীপ সমবায় সমিতির আহবায়ক সুধীর দাশ ও সদস্য সচিব মংশৈসিং মারমা(মিলটন) বক্তব্যে জানান, রুমা উপজেলার ৮০টি জীপ গাড়ি রয়েছে। এতে ৮০জন ড্রাইভার ও ৮০ জন হেলপারও রয়েছে। কোন সংঘাত চাই না,আমরা চাই শান্তিপূর্ণভাবে ড্রাইভার ও হেলপারদের দু’মুঠো ভাত জোগাড় করে দিতে। যদি এটি বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে জীপ গাড়ি গুলো বিলুপ্ত হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন।
তারা আরো বলেন, এ সমিতির বাস্তবায়নের পাশাপাশি সার্বক্ষণিক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীদের কাছে যথাযথ সহযোগিতা করে যাব।